ছবি: বামে অভিযুক্ত স্বামী ও ডানে নির্যাতিতা স্ত্রী।

শাহেদুল ইসলাম মনির, কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে স্ত্রীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনসহ হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের বদলা পাড়া নিবাসী শামসুল আলমের পুত্র রজি উল্লাহ প্রকাশ দাতেঁর ডাক্তার রজি উল্লাহ রজির বাড়িতে।

জানা গেছে, রুনা আকতার নামের এক নারীর সাথে দীর্ঘ দুই বছর ধরে রজি উল্লাহ পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে সালেহা বেগমকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করে আসছিল।সম্প্রতি দুই সন্তানের জননী সালেহা বেগম পরকীয়া আসক্ত স্বামী রজি উল্লাহর নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গোপনে বাপের বাড়িতে খবর দেয়।  সালেহার পিতা  কৈয়ারবিল ইউপির চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবরকে অবহিত করার পর মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে শ্বশুড় বাড়ি থেকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।

নির্যাতিতা সালেহা বেগম জানান,  গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (৭ জানুয়ারী) রাত আনুমানিক দুই টার সময় রজি উল্লাহ তার পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ি থেকে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে তুচ্ছ ঘটনার সূত্র ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আশেপাশের লোকজন ঘুমানোর সুযোগ নিয়ে হত‍্যার উদ্দেশ্য গলা চেপে ধরে ও লোহার রড দিয়ে অমানবিক শারিরিক নির্যাতন করে। এমনকি সালেহা বেগমের থেকে জোরপূর্বক ষ্ট্যাম্পে সই ও তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। রজি উল্লাহর মারধরে সালেহা এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে তার ছোট ছেলে রায়ান (৪) কে নিয়ে রজি উল্লাহ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। সকালে জ্ঞান ফিরে আসার পর নিরুপায় হয়ে সালেহা তার পিতা কৈয়ারবিল ইউনিয়নের পরান সিকদার পাড়ার মোঃ রশিদকে ফোন করলে তার আত্নীয়স্বজন রজি উল্লাহ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনার পরও রজি উল্লাহ তার স্ত্রী সালেহা এবং শ্বশুড়কে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে এ বিষয়ে মামলা অথবা শালিস না দেয়ার জন্য। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান রয়েছে। প্রথম সন্তান রাজিম চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র, ছোট সন্তান রায়ান (৪)।

বিগত ৪ বছর পূর্বে নির্যাতিতা সালেহার মা সাজেদা বেগম মারা যায়। মাতৃহারা সালেহা বেগমকে  রজি উল্লাহ পরকীয়া আসক্ত হয়ে নির্যাতন চালাতে শুরু করে। এ নির্যাতনের ঘটনায় সালেহা বেগমের পিতা মোঃ রশিদ মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার বিকালে কৈয়ারবিল ইউপির চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর, উক্ত ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রওশন আরা, হাছিনা আকতার, সাধারণ সদস্য মেম্বার শাহনেওয়াজ নির্যাতিত সালেহা বেগমকে কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালে দেখতে যান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রজিউল্লাহ রজির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মারধর ও তালাকনামায় এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের কথা স্বীকার করে বলেন,এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়,আপনার নাক ঢুকানোর দরকার নাই।

কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার জানান, এ বিষয়ে কেউ অবগত করে নেই অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।