সিবিএন:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার যুক্তি-তর্ক শুরু হয়েছে।
রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে যুক্তি-তর্ক শুরু হয়।

এ উপলক্ষ্যে প্রধান অভিযুক্ত টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ কারান্তরীণ সব আসামিকে আদালতে তোলা হয়েছে। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন করে সাফাই সাক্ষ্য শেষে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম জানান, সিনহার হত্যার মামলার বিচারিক কার্যক্রমের শেষ অংশ যুক্তি-তর্ক শুরু হলো। আজকের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষ করতে চেষ্টা করবে রাষ্ট্রপক্ষ। আগামীকাল থেকে আসামিপক্ষ যুক্তি-তর্কে অংশ নেবে।

গত বছরের ২৩ আগস্ট থেকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু হয়। তা শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এতে মামলার মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে তদন্তকারি কর্মকর্তাসহ ৬৫ জন সাক্ষ্যদান করেছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে আজ যুক্তি-তর্ক শুরু হলো।

উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্তভার দেন র‌্যাবকে।

ঘটনার ৬ দিন পর ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। পরে র‌্যাব ঘটনায় পুলিশের দায়ের মামলার ৩ সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। সর্বশেষ গত বছর ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব।

গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এবং র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারি পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত বছর ২৭ জুন আদালত মামলার ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।