আব্দুস সালাম,টেকনাফ:

টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক (টমটম) চালক রুবেল হত্যা মামলার মূলহোতা ও আসামি হাদিসুর রহমান সাগরকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত হাদিসুর রহমান সাগর কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ছনখালী মালি পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। বর্তমান ঠিকানা টেকনাফ পৌরসভার কুলাল পাড়া।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ উসমান গনি গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, গত ৪এপ্রিল রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিগণের পরস্পর যোগসাজশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টমটম চালক রুবেলকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ ঘটনাস্থলে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সংবাদ পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে মিশন শুরু করে পুলিশ।

দীর্ঘ একমাস অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডটির মূল রহস্য উদ্ঘাটনসহ চাঞ্চল্যকর টমটম চালক রুবেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান মাস্টার মাইন্ড হাদিসুর রহমান সাগরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

ওসি আরও জানান, ঘটনার দিন টমটম চালক রুবেলকে শাপলা চত্বর থেকে মূলহোতা হাদিসুর রহমান সাগর নেশা করার জন্য মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে মিঠাপানির ছড়া এলাকায় নিয়ে যায়।সেখানে উভয়েই মাদকদ্রব্য (গাঁজা) সেবন করে।রুবেল অতিরিক্ত নেশাগ্রস্ত হলে তার সাথে থাকা হাদিসুর রহমান সাগর ছুরিকাঘাতে টমটম চালক রুবেলকে হত্যা করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত:হত্যাকাণ্ডটি ছিল অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর।ভিকটিম টমটম চালক রুবেল এবং মূল আসামি হাদিসুর রহমান সাগর পরস্পর বন্ধু।ঘটনার দিন ইফতারের পর দুই বন্ধু মাদকদ্রব্য (গাঁজা)সেবন করার জন্য মেরিন ড্রাইভে যায়।মেরিন ড্রাইভে অবস্থিত পেট্রোল পাম্প এর সামনে টমটমটি দাঁড় করিয়ে সমুদ্রের বিচে নামে।সেখানে উভয়ে মাদকদ্রব্য (গাঁজা)সেবন করে।তারা সেখানে প্রায় ৩০মিনিট ছিল।পরে তারা সিএনজি পাম্পের সামনে এসে মূল আসামি হাদিসুর রহমান সাগর টমটম এর ড্রাইভিং সিটে বসে এবং ভিকটিম রুবেল ড্রাইভার এর পাশের সিটে বসে।তারা মিঠা পানির ছড়ার দিকে যায়। ভিকটিম রুবেল অটো চালাতে চাইলে আসামি তাকে বাধা দেয় এবং বলে তুই বেশি নেশাগ্রস্ত আমি টমটম চালাই।এই নিয়ে দুইজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।ধস্তাধস্তির সময় ভিকটিম রুবেলের নিকট থাকা গাঁজা কাটার ছুরিটি হাদিসুর রহমান সাগর নিয়ে নেয় এবং রুবেলের গলায় ঢুকিয়ে দিয়ে অটো থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়।অটো এবং ভিকটিম রুবেল অটোসহ রাস্তার খাদে পড়ে যায়।এরপর ভিকটিম রুবেল গলা থেকে চুরিটি বের করে হাদিসুর রহমান সাগরকে মারতে গেলে হাদিসুর রহমান সাগর ছুরিটি কেড়ে নিয়ে ভিকটিম রুবেল এর মাথার পিছনে আঘাত করে।রুবেল মাটিতে পড়ে গেলে হাদিসুর রহমান সাগর পালিয়ে যায়।হত্যাকাণ্ডের এমন বর্ণনা দিয়ে গ্রেপ্তার হাদিসুর রহমান জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে তার দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে পরে তার ফেলে যাওয়া তার ব্যবহৃত পায়ের স্যান্ডেলসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করেন।উল্লিখিত স্যান্ডেল স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানাধীন পিএমখালী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য,এই হত্যাকাণ্ডটি ছিল ক্লেশ।টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ উসমান গনি বিষয়টি তার চৌকস পুলিশ টিম দ্বারা আন্তরিকভাবে তদন্ত করে হত্যাকারী হাদিসুর রহমান’কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।