অনলাইন ডেস্ক: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদের পাশে চান্দুর মোড় এলাকায় বড় এক খণ্ড শিলা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। এবার এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও নিউজ পোর্টালে দাবি করা হচ্ছে ৫ কেজি ওজনের শিলা পড়েছে আকাশ থেকে। তবে কৃষি বিভাগ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈজ্ঞানিকভাবে এটি সম্ভব না। কারণ বায়ুমণ্ডল ভেদ করে শিলা ভূপৃষ্ঠে পড়তে পড়তে শিলা খণ্ড এত বড় থাকার কথা নয়।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঝর বৃষ্টি শেষে শিলাখণ্ডটি হালিম নামে চা দোকানের পাশে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। মুহূর্তেই সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে ভাইরাল হয়।

জানা যায়, শনিবার বিকালে পাংশা উপজেলায় ঝর-বৃষ্টি হয়। শুধু পাংশা উপজেলা শহর এলাকায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে শিলা পড়ে। বৃষ্টিপাত শেষ হবার পর পাংশা উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশেই চান্দুর মোড়ে হালিমের চা দোকানের পাশে এক খণ্ড শিলা পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা দাবি করেন বৃষ্টির সঙ্গে শিলাখণ্ডটি আকাশ থেকে পড়েছে। সেটি সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে নানা কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।

চা দোকানি হালিমের সঙ্গে শনিবার যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি জীবনে এত বড় শিলাখণ্ড দেখিনি। আমার দোকানে অনেকেই ছিল। সবাই দেখেছে। কমপক্ষে ৫ কেজি ওজন হবে শিলা খণ্ডটির। শিলাখণ্ড দেখতে আমার দোকানের সামনে ভীর হয়ে যায়।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার দাস বলেন, আমার অফিস থেকে ঘটনা স্থল হেটে গেলে দুই মিনিট লাগে। আমি খবরটি শুনে সঙ্গে সঙ্গে একজন পাঠিয়েছি। তবে এই শিলাখণ্ডটি পড়তে কেউ দেখেনি। ভিডিওতে শিলার আকৃতি দেখে বাস্তব সম্মত মনে হয়নি। কারণ ওপর থেকে নিচে পড়লে নানা কারণে সেটির গা মসৃণ থাকে না। শিলাখণ্ডটি গোলাকার হয়। মুদি দোকানি যেটি দেখাচ্ছে সেটি চতুর্ভুজ আকৃতির। এছাড়া পাংশা শহরে শনিবার বিকেলে খুব বেশিও শিলাবৃষ্টি হয়নি। আমার ধারনা কেউ হয়তো রাস্তার পাশে বরফ খণ্ড ফেলে রেখেছে সেটিও ভাইরাল হয়েছে।

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শাহানুর হাসান বলেন, বজ্রাঘাতের সঙ্গে শিলা বৃষ্টি হয়। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও নানা কারণে শিলাখণ্ড ৫ কেজি হয়ে ভূপৃষ্ঠে আসার কোনো সুযোগ নেই। এটি আসলে বিজ্ঞান সম্মত না। আমরা এমন ঘটনা আসলে পায়নি বই পুস্তকেও।

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, শিলাখণ্ড ৫ কেজি হয়ে পড়বে এটি বাস্তব সম্মত না। একাডেমিকভাবে এটি আমরা পড়িনি। আবার কোথায় এমন বড় আকৃতির শিলা পড়েছে বলে রেকর্ড নেই। এখন ফেসবুকের সব কথায় বিশ্বাস করা ঠিক না।
-বাংলাভিশন