আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার):
কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযানে ৫কোটি ৫৯লক্ষ ২৪ হাজার টাকা মূল্যের ১কেজি ৫৫৮ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১০ হাজার পিস ইয়াবা, ১৯০ ক্যান বার্মিজ বিয়ার, ৯ হাজার ৩শ মিয়ানমারের প্রচলিত মুদ্রা কিয়াত এবং ৩২০ প্যাকেট বার্মিজ বিড়ি উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,সোমবার (২৫ এপ্রিল) ভোররাতে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সাবরাং বিওপি’র বিশেষ টহলদল বিআরএম-৫ থেকে আনুমানিক ১.৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণে বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন জিন্নাহ খাল সালাম মেম্বারের ঘের এলাকার পার্শ্ববর্তী নাফনদীর তীরে নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। কিছুক্ষণ পর টহলদল উক্ত এলাকায় কেওড়া বাগানের ভিতরে কতিপয় ব্যক্তির পায়ের শব্দ শুনতে পেয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। পরে টহলদল ৩জন চোরাকারবারীকে তিনটি বস্তা নিয়ে বেড়ীবাঁধের দিকে আসতে দেখে। উক্ত চোরাকারবারীদেরকে দেখা মাত্রই বিজিবি টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে খুব দ্রুত তাদের দিকে অগ্রসর হয়। চোরাকারবারীরা বিজিবি’র উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিজিবি টহলদল তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করে। চোরাকারবারীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রাতের অন্ধকারে তাদের বহনকৃত বস্তাগুলো ফেলে কেওড়া বাগানের ভিতরে পালিয়ে যায়। এরপর টহলদল উক্ত এলাকা তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারীদের ফেলে যাওয়া বস্তার ভিতর থেকে ৫কোটি ৫৮লক্ষ ২৫ হাজার ৫শ টাকা মূল্যের ১কেজি ৫৫৮ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১০ হাজার পিস ইয়াবা এবং ১৪২ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার আটক করতে সক্ষম হয়। মাদক চোরাকারবারীদের আটকের নিমিত্তে বর্ণিত এলাকা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে পরবর্তী সকাল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন পাচারকারী কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় মাদক চোরাকারবারীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এছাড়া রবিবার রাতে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ টেকনাফ বিওপির বিশেষ টহলদল বিআরএম-০৭ হতে আনুমানিক ৮০০ মিটার দক্ষিণ দিকে নাইট্যংপাড়া (টাওয়ার জোড়া) নামক এলাকায় টহলদল একটি পরিচালনা করে। উক্ত টহলদল দুইজন চোরাকারবারীকে মিয়ানমার থেকে একটি কাঠের নৌকাযােগে শূন্য লাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসতে দেখে। টহলদল উক্ত চোরাকারবারীদেরকে দেখা মাত্রই চ্যালেঞ্জ করে খুব দ্রুত তাদের দিকে অগ্রসর হয়। চোরাকারবারীরা বিজিবি’র উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই নৌকা হতে লাফিয়ে সাঁতার দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি টহলদল নৌকা তল্লাশী করে ২২ হাজার ৫৬৫ টাকা মূল্যের ৯,৩০০ মিয়ানমার প্রচলিত মুদ্রা কিয়াত ৯ হাজার ৩শ টাকা, ৩৫ প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই এবং ১টি কাঠের নৌকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির যথাযথ বাস্তবায়নকল্পে মাঠ পর্যায়ে বিজিবি’র অভিযানিক কর্মকাণ্ড এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। মাদক নির্মূলে বিজিবি’র প্রতিটি সদস্য দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেকোনো মূল্যে দেশকে মাদকমুক্ত করার ব্যাপারে বিজিবি সর্বদা বদ্ধপরিকর।