আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার):
কক্সবাজারের টেকনাফে এক মাদ্রাসার শিক্ষকের ছুরিকাঘাতে শিশু শ্রেণির এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে।
আহত ছাত্র সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর লম্বরী হযরত ফাতেমা (রাঃ) আদর্শ বালিকা ও নুরানী মাদরাসার শিশু শ্রেণিতে অধ্যয়নরত । সে গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত হয়েছে বলে জানা যায়। আহত ছাত্রের নাম আরশাদ আমিন (৬),পিতা আবদুল আমিন। এ ঘটনা নিয়ে উক্ত এলাকায় অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ওই শিক্ষকের কথায় ইতিপূর্বে গত ১৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে শিক্ষকের সাথে জাঁকি জালে মাছ শিকার করতে গিয়ে হেফজ খানার রোহিঙ্গা হাশেম মাঝির ছেলে রিদওয়ান (৮) নামে অপর এক ছাত্রের মেরিন ড্রাইভ থেকে মাথাবিহীন মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছিল।
তবে তখন কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন তিনি সড়ক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল।
উক্ত ঘটনায় কৌশলে ধামাচাপা দিয়ে পার পাওয়ায় ওই মাদরাসার কর্মরত শিক্ষকরা দায়সারাভাবে চলছে।
তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, যা নিরপেক্ষ তদন্ত করলে ঘটনার রহস্য বের হয়ে আসবে।
স্থানীয় ও আহত ছাত্রের পিতা জানান, আমার শিশু পুত্র আরশাদ আমিন প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসায় যায়। তাকে সাপ্তাহ খানিক আগে চুল কেটে ছোট করেছি। এরপরও চুল কাটার প্রয়োজন হলে আমাকে সতর্ক করলে সেলুন থেকে কেটে দিতাম।
আমার ধারণা হচ্ছে ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে চুল কাঁটার কৌশলে ছুরিকাঘাত করেছে। আমি আত্মীয় ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ করে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আমি ছেলের বাবা, চুল কাটতে হলে আমাকে বলতে পারতো একজন শিক্ষকের এমন সিদ্ধান্ত পরিকল্পিত। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়দের বিষয়টি জানিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়, তার আঘাতের জায়গায় সেলাই করতে হয়েছে। আমি তার শাস্তি কামনা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, ওই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সৌদিতে থাকে। ফলে তার অর্ধশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত ছেলেদের দিয়ে মাদরাসা পরিচালনা করছে। আগেও শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার অহরহ অভিযোগ রয়েছে।
যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল।
ভবিষ্যতে এমন ঘটনা হবে না মর্মে মৌখিক অঙ্গীকার বদ্ধ হয়ে ক্ষমা চাইলে তারা ছাড় পেয়ে যায়। তাদের কোথাও মামলা ও উচিত বিচার না হওয়ায় এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্মদিয়ে থাকে।

অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ ইসলামের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ছুরি দিয়ে ছাত্রকে আঘাত করিনি। আমি সকল শিক্ষার্থীদের কয়েকদিন আগের চুল কাটতে নিদর্শনা দিয়েছিলাম শ্রেণীক্ষকে কিন্তু কয়েকজন ছাত্রের চুল লম্বা হলে। আমি নিজে ব্লেড দিয়ে দিয়ে চুল কাটতে গিয়ে ব্লেডের আঘাতে ছাত্রের মাথা কেটে যায়। এটা আমার ভুল হয়েছে। আমি ক্ষমা চাই।

এ ব্যাপারে হযরত ফাতেমা (রাঃ) আদর্শ বালিকা ও নুরানী মাদরাসার শিক্ষক ও পরিচালক ওমর ফারুক জানান, আমি কক্সবাজার ছিলাম তবে আমি অবগত হয়েছি। এক ছাত্র আহত হয়েছে। তবে এটা ছুরির আঘাত নয়। মাদরাসার শিক্ষক ছেলের চুল লম্বা হওয়ার কারণে ব্লেড দিয়ে চুল কাটতে গিয়ে ছাত্রের মাথা কেটে যায়, সাথে সাথে ছাত্রকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।