মানচিত্র তৈরি করে অপরাধী ধরেন ওসি আবদুল হালিম
সিবিএনঃ
কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও থানার এক বছর পূর্ণ হলো। গত বছরের ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে থানা উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। প্রথম ওসির দায়িত্ব নেন আবদুল হালিম। সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ বা মামলা করতে টাকা লাগে না। থানা এখন সেবাবান্ধব, দালালমুক্ত। গেল একটি বছরে বিভিন্ন অভিযোগে ৮৬টি মামলা রেকর্ড হয়েছে।
ওসি হিসেবে নয়, জনগণের অতিসাধারণ বেশে জনগণের পাশে থাকেন আবদুল হালিম। মানুষের স্বপ্নের পুলিশ হতে কাজ করছেন নিরলস।
ওসি হিসেবে যোগদান করেই এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এবং অপরাধী ধরতে এলাকাভিত্তিক মানচিত্র তৈরি করেন আবদুল হালিম। সে মোতাবেক ৫টি ইউনিয়নে পুলিশ অফিসারদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। যখন পুলিশ সদস্যরা অপারেশনে থাকেন তখন ওই মানচিত্র দেখে দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ঈদগাঁওকে মাদকমুক্ত রাখতে ওসি আবদুল হালিমের নেতৃত্বে অভিযান চালমান। কাজের বেলায় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করেন। ইতোমধ্যে কুখ্যাত মাদক কারবারিরা গ্রেফতার হয়েছে। দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন।
সম্প্রতি সময়ে ঈদগাঁও থানা চত্বরে ফুলের বাগান, ওয়াটার স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করেছেন ওসি আবদুল হালিম। তার উদ্যোগে থানা চত্বরটি যেনো ফুলের বাগানে রূপান্তরিত হয়েছে।
কোভিড-১৯ এর আঘাতে পৃথিবী যখন অচেনা, পূর্ব থেকে পশ্চিম কিংবা উত্তর থেকে দক্ষিণ পুরো গ্রহটাই লন্ডভন্ড, ছোঁয়াচে অদৃশ্য জীবাণুর কারণে সবাই ভয়ে তটস্থ, আপন মানুষগুলোও যেন পর হয়ে গেছে। প্রিয়জনও দূরে সরে গেছে, এর মধ্যে ব্যতিক্রমও রয়েছে। মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে অন্যের সাহায্যে ছুটে গিয়েছেন ওসি আবদুল হালিম।
একজন নেতা যেমন কর্মীদের অনুপ্রেরণা দিয়ে নেতৃত্ব প্রদান করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যান, একজন কোচ যেভাবে কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে শিষ্যের কাছ থেকে সেরাটুকু বের করে নিয়ে আনেন, একইভাবে তিনি তাঁর অফিসারদের কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে কাজ করিয়ে নেন।
শত বিপদে, প্রতিকূলতার মধ্যে যিনি বট গাছের ন্যায় আগলে রাখেন অধীনস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, সদস্যদের। ভালোবাসায় মুগ্ধ হন সাধারণ মানুষও।
স্থানীয়দের ধারনা টাকা ছাড়া থানায় কোনো কাজ হয় না। এমনটা ধারণা পাল্টে দিয়েছেন ওসি আবদুল হালিম। ঈদগাঁও থানা নামে ফেসবুক ফেইজে নিয়মিত জনবান্ধন কর্মকান্ড গুলো পোস্ট করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অনেকের মাঝে।
ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ দেখভালের পাশাপাশি সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের জন্য ওসি কাজ করেছেন নিরলসভাবে। দায়িত্ব নিয়েই থানার সব পুলিশ সদস্যদের সমানভাবে দায়িত্ববণ্টন করে দেন তিনি। তার কাজের সাফল্য ধারাবাহিকতা-কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, থানা দালাল ও দুর্নীতিমুক্ত। তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা। অনেক দাগি আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। ইয়াবা ও অস্ত্র, মাদক উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চলমান আছে।
তিনি বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। জনগণের জানমাল হেফাজতের দায়িত্ব আমাদের। আইন শৃঙ্খলার কাজে সাধারণ মানুষ যেন পুলিশকে সহযোগিতা করে।
আবদুল হালিম বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় থানা উদ্বোধনের পর কর্মস্থলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
আইনের সেবক হয়ে জনতার সারিতে থেকে সাধারণ মানুষের সেবা করে যাবো, প্রতিটি মানুষ আমাকে খুব কাছ থেকে পাবে এবং তাদের সমস্যার কথা গুলি বলতে পারবে ঠিক তেমনভাবে আমি ঈদগাঁও উপজেলাবাসীর জন্য কাজ করব।
ওসি মনে করেন, একজন সাধারণ মানুষ যখন আইনের সেবকদের কাছে ন্যায় বিচার পাবে ঠিক তখনই মানুষের মাঝে পুলিশের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস জেগে উঠবে।
সাধারণ মানুষ যখন আমাদের কাছে আসতে পারবে ঠিক তখনই তারা অন্ধকার জীবন থেকে আলোর পথে ফিরে আসবে।
একজন অপরাধীকে ঘৃণার চোখে না দেখে ভালোবাসার দৃষ্টিতে আলোর পথে নিয়ে আসা মনে করেন ওসি আবদুল হালিম।
তিনি বলেন, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা সত্যিই মানুষের স্বপ্নের পুলিশ হতে চাই।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০৪১ সালে আমরা যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সে উন্নত বাংলাদেশের আমরাই হবো উন্নত পুলিশ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।