এস এম জুবাইদ,পেকুয়া:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় দেদারছে লুট হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল। গত দুই মাস ধরে জমির উপরি অংশ (টপ সয়েল) মাটি লুটের মহোৎসব চললেও রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে প্রশাসন। প্রতিদিন প্রশাসনের চোখের সামনে মাটি লুট হলেও নেই কোন ভূমিকা। ফলে বীরদর্পে এ অবৈধ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে একটি শক্তিশালী মাটিখেকো সিন্ডিকেট।

মাটির উপরি অংশ (টপ সয়েল) ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টপ সয়েল কাটার ফলে জমি তার উর্বরতা হারাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। দিন দিন জমির উপকারী উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় কৃষিতে ফসল উৎপাদনে ধ্বস নামার উপক্রম দেখা দিয়েছে।

উপকারী উর্বর অংশ কাটার মহোৎসব চলছে উপজেলার ফসলি জমির মাঠে মাঠে। এসব মাটি ইটভাটা, পুকুর ও ভিটে ভরাট কাজে ব্যবহার হচ্ছে। একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নির্বিঘ্নে জমির টপ সয়েল কেটে পাচারে মেতে ওঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার সদর, টইটং ও বারবাকিয়া ইউনিয়নে ফসলি জমির মাঠে শোভা পেয়েছে ২০/২৫টির মাটিকাটার যন্ত্র (স্কেভেটর)। স্কেভেটর দিয়ে জমির উপুরি অংশ কেটে ডাম্পার ও মিনি ট্রাকে ভর্তি করছে। শত শত গাড়ি কেটে নেওয়া মাটি নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এছাড়া পুকুর ও মানুষের ভিটে ভরাট কাজে ব্যবহার হচ্ছে এসব মাটি।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির উপুরি অংশ হলো জমির প্রাণ। জমির ওপরের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটিকে উর্বর অংশ (টপ সয়েল) বলা হয়। মাটির ওই অংশই থাকে মূল জৈবশক্তি।

কৃষক আবুল কালাম, আমিনুল হক, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টপ সয়েল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। দিনরাত চলছে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা। শেষ করে দিচ্ছে আবাদি জমি। টপ সয়েলের কারনে বিরুপ প্রভাব পড়বে কৃষিতে। ফসল উৎপাদন অনেকটা কমে যাবে।

জানা যায়,ডিসেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত তিন মাস চলে টপ সয়েল কাটার মহোৎসব। নিয়মনীতি না মেনে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ডাম্পার ও মিনি ট্রাক ভরে দেদারছে নিয়ে যাচ্ছে মাটি। গ্রামীন সড়কে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব মাটি ভর্তি যানবাহন। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় বলেন,টপ সয়েল বা জমির প্রান না থাকলে ফসল উৎপাদন বিপর্যয় ঘটবে। টপ সয়েল কেটে নেওয়া হলে কমপক্ষে ২/৩ বছর জমির ভাল ফলন হবেনা। ফসল উৎপাদন কম হলে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আসিফ আল জিনাত বলেন,বিষয়টি আসলে কেউ অবগত করেননি। আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করেন। অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।