প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার ভিত্তিক পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম- সিইএইচআরডিএফ এর ২০২২ সালের ১ম লোকাল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহেশখালী পৌরসভার অন্তর্গত অহনা কনভেনশন হলে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারী।
সিইএইচআরডিএফ এর প্রধান নির্বাহী ও সম্মেলনের সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ মিয়া’র সভাপতিত্বে ও কুতুবদিয়া এরিয়ার প্রতিনিধি আবু সালেহ এবং বোরহান উদ্দিন রাব্বানী এর সঞ্চালনায় সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাই, মহেশখালী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক সরোয়ার কামাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মহেশখালী উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি আব্দুস সালাম বাঙালী, হোয়ানক কলেজের লেকচারার ও বাংলাদেশ নেচার ফাউন্ডেশনের বড় মহেশখালীর ডিরেক্টর খাইরুল করিম আনসার, ক্রীড়াব্যক্তিত্ব আমিনুল হক, স্বপ্নছোঁয়া ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম,শিক্ষাবিদ ও ডাক্তার সিরাজুল হক,সাংবাদিক এম রমজান আলি প্রমূখ।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিইএইচআরডিএফ এর সহকারী প্রধান সমন্বয়ক ও মহেশখালী লোকাল সম্মেলনের আহবায়ক আব্দুল মান্নান রানা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মকছুদ মিয়া বলেন, সিইএইচআরডিএফ এর মত একটি সংগঠন সময়ের দাবী। এ সংগঠনের কার্যক্রমে আমি সবসময় পাশে থাকব। সিইএইচআরডিএফ এর মত করে তরুণরা নিঃস্বার্থ ভাবে এগিয়ে আসলে সমাজ এগিয়ে যাবে। তিনি তরুণদের পরিবেশগত সংকট নিরসন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলা ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত করা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার জন্য সকলকে আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, এই দেশকে সাজাতে হলে তারুণ্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তরুণদের হাত ধরে সিইএইচআরডিএফ আগামীর টেকসই বাংলাদেশ গড়বে। যেখানে তরুণরা ব্যাক্তিগত চিন্তার কবলে পড়ে সামষ্টিক স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে সেখানে দেশ এমনিতেও তলানিতে যাবে, এটি স্বাভাবিক। তাই দেশকে গড়তে হলে সরকারের পাশাপাশি তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তরুণরা যদি জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার ও পরিবেশ নিয়ে কাজ না করে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, তরুণদের জলবায়ু বিষয়ে সচেতন হতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তন এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে হবে।
আহবায়কের বক্তব্যে আব্দুল মান্নান রানা বলেন, পরিবর্তন একটি প্রক্রিয়া। এটি দীর্ঘ এবং দুঃসাধ্য। আগামীর মহেশখালীতে পরিবর্তন দেখতে চাইলে তরুণদের নতুন করে ভাবতে হবে। একইসাথে রাজনীতিক ও নাগরিক সমাজকে জনগণের অধিকার বিষয়ে আরো তৎপর হতে হবে। উন্নয়নের যে যজ্ঞ চলছে তাতে প্রান্তিক মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান রাখেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব আব্দুল হাই সিইএইচআরডিএফ এর কাজের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মানে তারুণ্যের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
মহেশখালী উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সম্মানিত সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জনাব আব্দুসসালাম বাঙালি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলার সৎ সাহস ও মনোবল নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো বেগবান করার আহবান জানান এবং মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো আপোষহীন ভাবে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহবান করে।এবং বক্তব্য শেষে তিনি নিজের লেখা “আমার সংশয় কেনো থাকবে” শীর্ষক কবিতা আবৃত্তি করেন।
এদিকে সিইএইচআরডিএফ এর সমগ্র কার্যক্রমের সাথে একাত্বতা পোষণ করে মহেশখালীর পরিবেশ, সামাজিক উন্নয়ন, ও সকল ধরনের অনিয়ম রোধে যুবকদের কাজ করার আহবান জানান সম্মেলনের বিশেষ অতিথি ও অত্র অঞ্চলের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জনাব বখতিয়ার আলম।
উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন মহেশখালীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ক্রিড়া ব্যক্তিত্ব জনাব আমিনুল হক।তিনি সিইএইচআরডিএফ এর সকল কাজে আজীবন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
এছাড়াও চারিত্রিক উন্নয়ন ও বড় স্বপ্ন লালনের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন মহেশখালী প্রেসক্লাবের সদস্য ও সাংবাদিক এম রমজান আলী।
এনআরবি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও স্বপ্নছোঁয়া ফাউন্ডেশনর সম্মানিত উপদেষ্টা জনাব আব্দু সালাম তার বক্তব্যে মহেশখালীর পরিবেশ ও নানামুখী সংকট তুলে ধরেন এবং এর সমাধানচেয়ে আশা ব্যক্ত করেন।
মহেশখালী হোয়ানক কলেজের লেকচারার ও বাংলাদেশ নেচার ফাউন্ডেশন,বড় মহেশখালী শাখার ডিরেক্টর জনাব খাইরুল করিম আনসার বলেন দেশের পরিবেশগত সংকট থেকে উত্তরণ হতে হলে যুবসমাজের ঐক্যের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও তিনি মহেশখালীর সংকটপূর্ণ পরিবেশ নিয়ে কথা বলেন।
সিইএইচআরডিএফ এর সকল কাজের প্রতি একাগ্রতা প্রকাশ করেন এবং প্রতি বছর সম্মেলনের আয়োজন করার অনুরোধ জানান। সকল প্রকার অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে উপস্থিত যুব সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
সিইএইচআরডিএফ’র সহকারী প্রধান ব্যবস্থাপক (ব্যবস্থাপনা) সাঈদ মোহাম্মদ শুভ বলেন, সাগর পথে, কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যাওয়ার একমাত্র হলো স্পিডবোট ও ডেনিসবোট । যাতায়াতের এ মাধ্যমে এক উপজেলায় হতে অন্য উপজেলা প্রায় প্রতিদিন ৪-৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।কিন্তু দক্ষ ম্যানেজমেন্ট না থাকায় প্রতিদিন যাত্রীদের বেশি ভাড়া সহ অন্যান্য অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে।
সিইএইচআরডিএফ’র সহকারী প্রধান সংগঠক ও সম্মেলনের যুগ্ম- আহবায়ক রুহুল আমিন বলেন, আমরা মহেশখালীর তরুণদের নিয়ে আগামীর মহেশখালী গড়তে চাই,মহেশখালী একটু অপার সম্ভাবনার দ্বীপ।এই দ্বীপের তরুণদের মহেশখালী সর্বস্তরের মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে। সিইএইচআরডিএফ এর অধিকার নিয়ে কথা বলার তরুণদের এগিয়ে আসতে আহবান করার জন্য মাঠে নেমেছে। তিনি বলেন, সিইএইচআরডিএফ গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভিন্ন ধারার চিন্তা করে এমন একটি সংগঠন। এই সংগঠন তরুণদের জন্য একটি সুন্দর প্লাটফর্ম, এই প্লাটফর্মে সবাইকে যোগ দেওয়ার জন্য আহবান করেন।
সিইএইচআরডিএফ বহিঃস্থ ডিভিশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি জায়েদ ইকবাল রাকিব সংগঠনের চারটি মৌলিক কর্মসূচি- পরিবেশ,মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে কুতুবদিয়ায় ১৯৯১ সালের পর থেকে ক্লাইমেট রিফিউজি হিসেবে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক লোক কক্সবাজার বান্দরবানের গহীন অঞ্চলে সামাজিক বন্ধন বিচ্ছেদের মধ্যদিয়ে যে সামাজিক অধিকার হ্রাস হয়েছে তার উদ্ধিতি আনেন এবং সমাজের মানুষের অধিকার বাস্তবায়নে তরুণদের এগিয়ে আসার আহবান রাখেন।
দেশব্যাপী চলমান সামাজিক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকট হতে উত্তরণে যুবসমাজের করণীয় এবং যুব সমাজের অবস্থান নিশ্চিত করা ততা নিজ দায়িত্বের প্রতি যত্নশীল ও সোচ্চার হওয়ার আহবান করেন সিইএইচআরডিএফ কুতুবদিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধি উক্ত সম্মেলনের উপস্থাপক মোহাম্মদ আবু সালেহ।
অন্যান্যের মধ্যে এতে বক্তব্য রাখেন নিয়ন্ত্রণ ডিভিশন এর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক রমজান আলী, উপকূলীয় ফোরামের সমন্বয়ক এম. আলাউদ্দিন, কালারমারছড়া ফোরামের বশির আহমদ, বড় মহেশখালী ফোরামের জাহাঙ্গীর আলম।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ ডিভিশনের ফোকাল জিহাদুল ইসলাম, সহকারী সম্পাদক (প্রচার) নাসির উদ্দীন সোহেল, সম্মেলনের সদস্য সচিব ফরহাদ আলম, যুগ্ম- আহবায়ক ইফতেখার মোহাম্মদ মোহাব্বত আলী প্রমূখ।
সম্মেলনে মহেশখালী এরিয়ার ১৫ টি সংগঠনের ২ শতাধিক এক্টিভিস্ট উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।