সংবাদদাতা: রামু উপজেলার একটি টং দোকানের নিচ থেকে ইমন বড়ুয়া (২১) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া বালানি ঘাটা এলাকাস্থ ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা সড়কের পশ্চিম পাশের সেলিম উল্লাহর মুদির দোকানের (টং দোকান) নিচ থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। দুপুরে লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় তারা। তবে কি কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, নিশ্চিত করে তা বলতে পারেনি পুলিশ। সকালে এক যুবকের লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। লাশটি একনজর দেখতে ভীড় করে আত্মীয়-স্বজন সহ উৎসুক জনতা।

সোমবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান, কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ারুল হোসাইন, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, রামু থানার এস আই হাসান মাহমুদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য রুমা আকতার ও শাহাব উদ্দিন।

মৃতদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করেন, রামু থানার এস আই হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, সোববার সকালে স্থানীয়রা মুদি ব্যবসায়ী সেলিম উল্লাহর টং দোকানের নিচে লাশটি পড়ে থাকার খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ১১টা ১৫মিনিটের সময়ে লাশটি উদ্ধার করে। গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে লাশের পাশে কাঠকাটার একটি করাত ও একটি লাল রঙের বালতি পাওয়া গেছে।

ওই টং দোকানের মালিক মুদি ব্যবসায়ী সেলিম উল্লাহ (৩৫) জানান, প্রতিদিনের মতোই সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে দোকান খোলা হয়। দোকান খোলার পরে প্রসাব করা জন্যে দোকানের পিছন দিকে যাওয়ার পরই দেখতে পান, টং দোকানের নিচে এক যুবকের দেহ পড়ে আছে। এরপর স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

ইমন বড়ুয়ার স্ত্রী জয়ন্তী বড়ুয়া, বড়ভাই লিমন বড়ুয়া ও চাচা সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, নয় মাস পূর্বে রামু উপজেলা ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপি এলাকার আশীষ বড়ুয়া মেয়ে জয়ন্তী বড়ুয়ার সাথে রাজারকুল ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া এলাকার দিনমজুর সুনীল বড়ুয়ার দ্বিতীয় ছেলে ইমন বড়ুয়ার বিয়ে হয়। রোববার সন্ধ্যার পরে ইমন বড়ুয়া তার স্ত্রী জয়ন্তী বড়ুয়াকে নিয়ে শশুর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে।

জয়ন্তী বড়ুয়া জানান, রাত ১২টার দিকে একটু আসছি বলে বেরিয়ে যায় ইমন। বাড়ি ফিরতে দেরী হচ্ছে দেখে, অনেকবার ফোন করেছি। ইমন ফোন রিসিভ করেনি। সকালে খবর শুনে ছুটে আসি। তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পারছিনা।

রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান ও ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য শাহাব উদ্দিন জানান, কি কারণে ছেলেটি মারা গেছে বুঝা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করলেই তা বুঝা যাবে।

কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে হয় না। এটার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা উচিত। তিনি বলেন, দোকান ঘরে নিচে লাশ কেন? ওই লাশ ওখানে গেল কেন? আসলে হয়েছে কি? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছেনা।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, কি কারণে ছেলেটি মারা গেলো, এখনও অস্পষ্ট। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্যে, তদন্ত চলছে।