হ্যাপী করিম, মহেশখালী :
বিধবা ভাতার কার্ডটা হলে খুব উপকার হতো, স্বামী হারা সুফিয়া বেগমের বার্ধক্যজনিত কারণে নানা রোগে-শোকে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি। বয়স হয়েছে ৫৫ বছর। চিকিৎসা দূরের কথা, জীবনের শেষ সময়ে একটু সচ্ছলতার আশায় বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য ধরনা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। ১২ বছর ধরে আশ্বাস মিললেও এখনো জোটেনি কোনো কার্ড।
সুফিয়া বেগমের বাড়ি মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের কামিতারপাড়া গ্রামে। এ গ্রামের মৃত আব্দু শুক্কুরের স্ত্রী সুফিয়া বেগম। ১২ বছর আগে (০৭/০৫/২০১০) কুতুবজোম খোন্দকারপাড়া এলাকার নুরুল কবির বহদ্দারের মালিকানাদিন ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনায় বঙ্গোপসাগরের নিখোঁজ রয়েছেন সুফিয়ার স্বামী। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বিধবা ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সিমাবদ্ধতা নাই, সেই অনুযায়ী সুফিয়া বেগম বিধবা ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও এত দিনেও কেউ তাঁর সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুফিয়া বেগমের স্বামী আব্দু শুক্কুর মারা গেছেন প্রায় ১২বছর আগে। জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মসাল (১৯৬৭) অনুযায়ী সুফিয়া বেগমের বর্তমান বয়স ৫৫ বছর। সহায়-সম্পদ বলতে একখণ্ড বাড়িভিটা ছাড়া তাঁর তেমন কিছু নেই। সংসারজীবনে ২ছেলে ও ২মেয়ের মা হন সুফিয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর খুব কষ্টত আছি। অসুস্থ হলে ঠিকমতো ওষুধ কিনে খ্যাতে পারি না। একটু খ্যায়ে-পড়ে চলার জন্য ম্যালা দিন ধরে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য কত্তবার গেছি, হিসাব নাই। ব্যাবাক খালি কথা দিছে, কেউ কথা রাখেনি (রাখেনি)। ছোট ছেলেদের, ‘উপার্জনের টাকায় না চলায় ধ্যারদেনা করে খুব কষ্টে চলতেছি। তার ওপর আমার দেখাশোনা করতে হয়। এর মধ্যে অসুস্থ আমাকে ওষুধ খাওয়ানো লাগে। বয়স হয়ে যাওয়ায় প্রায় সব সময়ই অসুস্থ থাকি। বিধবা ভাতার কার্ডটা হলে খুব উপকার হতো।
এ ব্যাপারে কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল বলেন, ‘এত বছর ধরে বিধবা নারীর ভাতার কার্ড হয়নি, এটা আমার জানা ছিল না। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি আমার কাছে এ ব্যাপারে আসেননি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা বলে যৌক্তিকতা থাকলে আমি তাঁর একটা বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ওই বিধবা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করলে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিধবা ভাতা পাওয়ার মতো উপযুক্ত হলে তাঁকে অবশ্যই কার্ড করে দেওয়া হবে।