আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার):
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও সতর্ক সংকেতের কারণে সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া ২ হাজারের বেশি পর্যটক টেকনাফ ফিরে এসেছেন।
সতর্ক সংকেত শিথিল হওয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার দুটি নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল ফের শুরু হয়েছে। এসব জাহাজ করে সন্ধ্যায় দ্বীপে আটকা পড়া পর্যটকরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছেন।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ’র নদী বন্দরে জেটিঘাট ও কক্সবাজার থেকে পর্যটক নিয়ে ৮টি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজগুলো সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়।
বিকেল সাড়ে তিনটায় আটটি জাহাজে করে গত রবিবার ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটক টেকনাফ ও কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ফিরে গেছেন।

এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও ৩নম্বর সতর্ক সংকেতের কারণে সোমবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত শিথিল হওয়ায় সকালে ৮টি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও সেন্টমার্টিন কক্সবাজার নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়।

জহির উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌরুটে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, এসটি শহীদ সুকান্ত বাবু, এমভি শহীদ সালাম, বে-ক্রুজ, এমভি পারিজাত ও এমভি ফারহান ক্রুজ বেলা সাড়ে বারটার একটির পর একটি করে সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়। এ সাতটি জাহাজে করে প্রায় তিন হাজারের মতো পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে গেছেন।
অন্যদিকে, সেন্টমার্টিন- কক্সবাজার নৌরুটে “কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ” পর্যটক পরিবহন করছেন।
আটকেপড়া পর্যটকেরা এসব জাহাজে করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ও কক্সবাজারের ঘাটে নিরাপদে পৌছেছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকের পক্ষে আবহাওয়াবিদ মো: শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপিতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন টেকনাফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, একদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার আমার দুটি জাহাজে করে ৬৩৫জন পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। সেন্টমার্টিনে আটকেপড়া পর্যটকদের নিরাপদে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়।

এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করায় সোমবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও সেন্ট মার্টিন-কক্সবাজার এ দুটি নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এতে দুই হাজারের অধিক পর্যটক
সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েন। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে টেকনাফ থেকে সাতটি ও কক্সবাজার থেকে একটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সুতরাং, জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকেরা সন্ধ্যায় নিরাপদে টেকনাফ ও কক্সবাজার ফিরে এসেছেন।