আব্দুস সালাম, টেকনাফ:
টেকনাফ সেন্টমার্টিনদ্বীপের সমুদ্রের উপকূলজুড়ে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব। সৈকতে ডিম পারতে আসলেই মা কচ্ছপের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুর। এতে অনেক সময় মারা যাচ্ছে মা কচ্ছপ। এছাড়া দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও থাকেন কুকুর আতঙ্কে। এনিয়ে দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুর থাকবে কি থাকবে না এসব বিষয় নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল।
তার অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রবিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে সেন্টমার্টিন সৈকত থেকে কুকুর পুনর্বাসনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
উপজেলা পরিষদ ও প্রাণিস¤পদ দপ্তরের সহতায় এ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সদ্য যোগদানকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল, প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ, এমওডিসি ডা. প্রণয় রুদ্র,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম প্রমুখ।
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী জানান, সেন্টমাটিনে কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয়দের কামড় দেওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া সৈকতে ডিম পারতে আসা কচ্ছপগুলো হুমকির মুখে রয়েছে। ফলে দ্বীপ থেকে কুকুরকে পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান,আমাদের চেষ্টা থাকবে দ্বীপ থেকে অন্তত অর্ধেক কুকুর সরানো। কুকুরগুলো সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের মূল ভূখন্ডের সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ, ঘোলারচর ও বাহারছড়াসহ উপজেলায় বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন করা হবে, যাতে কুকুরগুলোও অভুক্ত না থাকে।
দ্বীপের বাসিন্দারা জানায়, সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষের বসবাসের পাশপাশি প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটকদের আনাগোনা। কিন্তু দ্বীপে ২ হাজারের বেশি বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে । ফলে প্রতিনিয়ত পর্যটক ও সাধারণ মানুষ কুকুরের আতঙ্কে রয়েছেন। দুইমাসে প্রায় শতাধিকের বেশি পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন। বিশেষ করে সৈকতে ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপসহ হাঁস, মুরগি, মাছ খেয়ে ফেলছে কুকুর।
প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ জানান, এতো সংখ্যক কুকুরকে একসঙ্গে কোনো একটি অঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হলে সেখানে অবশ্যই খাদ্যসংকট দেখা দেবে। ফলে কুকুরগুলোকে স্থানান্তরিত করার পরও যাতে খাবারের সংকট তৈরি না হয় তার জন্য সেগুলোকে জনপদ অর্থাৎ যেখানে মানুষের বসবাস রয়েছে তেমন কোনো এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথমদিনে দ্বীপ থেকে ৩৬টি কুকুরকে খাঁচার ভিতরে ভরে ট্রলারে করে টেকনাফে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে কুকুর নিধন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এতে কুকুর নিধন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে।