এস.এম.জুবাইদ,পেকুয়া:

পেকুয়ার রাজাখালী ইউপি নির্বাচনের প্রায় ৯০ দিন ফেরিয়ে গেলেও এখনও প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারেনি নির্বাচিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল।

জানা যায়, বিগত ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬ টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬ টি ইউপিতে চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছে। তবে ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে টইটং ইউপিতে নির্বাচন হয়েছিল। অবশিষ্ট ৬ টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনে ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ১ টি ইউপিতে ক্ষমতাসীন দল মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন রাজাখালীতে নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল। অপর ৬ টি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল এর আগেও রাজাখালী ইউপিতে চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে শপথ ও গ্রহন করেছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন ইউনিয়ন পরিষদ অপারেশনাল ম্যানুয়েলে প্যানেল চেয়ারম্যান ব্যবস্থার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা ও নির্দেশনা রয়েছে।

স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ অপারেশনাল ম্যানুয়েলে পৃষ্ঠা-২২ ও ৩,৪,৫ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে নির্বাচিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন প্রক্রিয়া চুড়ান্তকরণ করতে হবে। সংরক্ষিত নারী সদস্যদের জন্য প্যানেল চেয়ারম্যান সংরক্ষিত রয়েছে। ৩ টি পদে প্যানেল চেয়ারম্যান প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করতে হবে।

তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হাওয়ার ৯০ দিন অতিবাহিত হতে চলছে তারপরও পারে নি প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন সম্পন্ন করতে। ফলে অমিমাংসিত রয়ে গেছে প্যানেল চেয়ারম্যানের নির্বাচন।

এদিকে পেকুয়ার সব কয়টি ইউপিতে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন সম্পন্ন করলেও ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত চেয়ারম্যান হিসাবে দাপট দেখিয়ে রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল সরকারের নীতিমালা অমান্য করে এ প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন সম্পন্ন করেন নি এখনো।

তবে নির্বাচিত ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের উদাসীনতা কে দায়ী করেন। কেননা নির্বাচন হলে ভোটে তিনি ওনার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবেন না তাই। তিনি চাই ভোটে না গিয়ে সিলেকশনে মনোনীত করতে। কিন্তু ইউপি সদস্যরা একমত না হওয়া প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন অমীমাংসিত থেকে যায়। সকলেই চাই ভোটে নির্বাচিত হোক।

এদিকে ২৮ মার্চ বিকালে উপজেলা উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল আলিমকে মারধর করেন তিনি নিমার্ণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে।

এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের উধর্বতন কতৃপক্ষের নিদের্শে ওই চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রকৌশলী বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় মামলা করে। মামলা না করতে এবং বিষয়টি মিমাংসা করতে অনেক চেষ্টা করলেও তা মিমাংসা হয়নি। অবশেষে মামলা হয়।

এ মামলার কারণে ওনার অনুপস্থিতিতে রাজাখালী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান হিসাবে কে দায়িত্ব নিবেন এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। কে চালাবে ইউপির দৈনন্দিন কার্যক্রম। আবার কি দূভোর্গ পোহাতে হবে এলাকার লোকজনের। এমনেও তিনি গতবারের চেয়ারম্যান থাকার আমলে সারাদিন ঘুমাতেন রাতে ঘুম তে উঠতেন। এলাকার জনগণ অনেক কষ্ট পেয়েছে ওনার ঐ আমলে।

এদিকে ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু জানান, এ বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান অনেকবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোন সুরাহা করতে পারেন নাই। রমজান মাসের মধ্যে তিনি শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ন। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যানের অমিমাংসিত বিষয়টি চুড়ান্ত করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, আমি একাধিকবার তাগিদ দিয়েছি। এরপরও করেনি এখনো সে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার কক্সবাজারের পরিচালক (উপসচিব) শ্রাবন্তী রায় জানান, বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করা না গেলে করনীয় কি হবে সেটি ম্যানুয়েলে বলা রয়েছে। এরপরও আমি এ বিষয়ে নির্দেশনা দিব অবশ্যই।