সিবিএন ডেস্ক:
গদিতে বসেই বড় ভাই নওয়াজ শরিফকে দেশে ফেরাচ্ছেন ছোট ভাই প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির দিন কয়েক আগে থেকেই এই গুঞ্জন ছিল পাকিস্তানের মোড়ে মোড়ে। ১১ এপ্রিল ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তার দুদিনের মাথায়, ভাই নওয়াজ শরিফের জন্য কূটনৈতিক পাসপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। ভাইকে ফেরানোর এই ত্বরিত নির্দেষ আসার পরেই শুরু হয়েছে নতুন কানাঘুষা- নামমাত্র প্রধানমন্ত্রী থাকবেন শাহবাজ। দেশ চালাবেন নওয়াজ। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিন্ডেট পদও চলে যেতে পারে নওয়াজের কাছে।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বর্তমানে আছেন লন্ডনে। ২০১৭ সালে ‘পানামা নথি’ ফাঁস হওয়ার পর পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন আদালত নওয়াজকে ১০ বছরের জেলের সাজা দিয়েছিলেন। দুর্নীতি এবং আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির মামলায় দোষী প্রমাণিত করে। রায়টি বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। জেলে কিছু দিন থাকেনও তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য বিদেশ সফরের আপিল করেন তিনি। রায়টি মঞ্জুর করে সুপ্রিমকোর্ট। এক মাসের জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত না আসায়, তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেয় সরকার। এরপর থেকে লন্ডনেই বসবাস করছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে নওয়াজকে দেশে ফেরত আনার জন্য খুব তৎপর শাহবাজ। ১৩ এপ্রিল ক্ষমতায় আসার একদিন পরেই ভাইয়ের জন্য কূটনৈতিক পাসপোর্ট বানানোর তড়িঘড়ি শুরু করেন তিনি। কিন্তু সেটা বাতিল করে দেওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উচ্চ আদালতে। ১৮ এপ্রিল নওয়াজের কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে রায় দেবেন পাকিস্তানের উচ্চ আদালত।
কিন্তু হঠাৎ করে এত তাড়াহুড়ো কেন শাহবাজের? চাইলে তো আর একটু সময়ও নিতে পারতেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, দেশে ফিরে পর্দার পেছন থেকে ভাইয়ের সাহায্যে দেশ চালাবেন তিনি। যেজন্য এত তোড়জোড়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে যে, ঈদের পরে দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছেন নওয়াজ। গল্প এখানেই শেষ নয়। পাসপোর্ট আবেদনকারী নাইম হাইদার বলেন, ‘নওয়াজ একজন পলাতক আসামি। অতঃপর কর্তৃপক্ষের উচিত পাসপোর্টটি ইস্যু না করা।’ সংবিধান অনুসারে দেশের সব নাগরিক সমানাধিকারের উপযোগী। কিন্তু এটি কার্যকর করা হলে সংবিধানের পরিপন্থি হবে না সেটি’ বলে জানান এই আবেদনকারী। কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী হবার জন্য কিছু শর্ত প্রযোজ্য থাকে। যার একটি হলো-কোনো প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংযোগ থাকা যাবে না আবেদনকারীর। কিন্তু নওয়াজের বেলায় পাকিস্তানের পাসপোর্ট আইনের এ ধারাটি মানছেন না প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ। সঙ্গত কারণেই চলমান পাকিস্তান রাজনীতিতে বিতর্কের শীর্ষমণি এখন ‘নওয়াজের পাসপোর্ট’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।