জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি , ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, ইফতার মাহফিল আমার কাছে ভন্ডামি মনে হয়।
এটা বেদাতায়াত । রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় কোন ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে নি।বাংলাদেশে ইফতার মাহফিল নামে এখন একটা প্রথা চালু হয়েছে।তাই অনেকেই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হয়। আপনারা আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন।তাই এসেছি। আমি এসব ইফতার মাহফিলে বিশ্বাস করি না।

১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অড়িটোরিয়ামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন “তিতাস ” কর্তৃক আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানে পীন-পতন নীরবতা বিরাজ করে।
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর ইফতারের সময় হলে সবাই ইফতার করলেও তিনি ইফতার করেন নি। আয়োজকদের অনুরোধে তিনি শুধু মাত্র একটি খেজুর খান। এ সময় মন্ত্রী কে বিমর্ষ দেখা যায়।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম এর আক্রমণ সম্পর্কে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন আমরা হেফাজতের আক্রমণের শিকার হই।
এই বিষয়ে টকশোতে কথা বলার লোকজনের অভাব নেই। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় গিয়ে কথা বলার লোকজনের অভাব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলার লোক পাওয়া যায় না।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তানদের সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের প্রথম বার এট ল আব্দুর রহিম এবং ভাষা আন্দোলনের প্রথম রূপকার
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।
আমরা আব্দুর রহিম ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের কথা ভুলে গেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
আবদুল কুদ্দুস মাখন আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সন্তান। আমরা কয়জন তাদের নাম জানি? ব্রাহ্মণবাড়িয়া নতুন প্রজন্মকে তাদের পূর্বসূরিদের ইতিহাস জানতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি সাকিব আল হাসানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইরফান খন্দকার সোহেলের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন,
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সন্তান হিসেবে শিক্ষার্থীদের যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকব।
বর্তমানে বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর ১২৩তম অর্থনৈতিক দেশ । আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হলে‌ দক্ষ মানব সম্পদ লাগবে। তাহলে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

আরেক বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন
(পিএসসি)’র সদস্য অধ্যাপক ডক্টর দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, আমি পিএসসির সদস্য হিসেবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষার্থীরা অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনেক পিছিয়ে।
আমরা সবাই মিলে একসাথে এগিয়ে যাবো। এজন্যই তোমাদেরকে লেখাপড়ার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট এবং কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ডঃ আব্দুল বাছির , যুগ্ন সচিব রাব্বী মিয়া, অধ্যাপক
সন্তোষ কুমার দে , ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন মঈন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।