আবু সায়েম, কক্সবাজারঃ
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কক্সবাজারে যৌথ অভিযানে নেমেছে প্রশাসন।ও বনবিভাগ। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজার পৌরসভা নুনিয়াছড়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাশে নতুন ফিশারি ঘাট এলাকায় শামশুল আলম নামের এক ব্যক্তির প্রক্রিয়াজাত কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে প্রায় ৫ মণ বিক্রয় নিষিদ্ধ হাঙ্গর ও শাপলাপাতার শুঁটকি জব্দ করা হয়েছে। পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নিরুপম মজুমদারের আদেশ ও সহযোগিতায় বিক্রয় নিষিদ্ধ শাপলাপাতা এবং হাঙ্গর কেরোসিন ঢেলে জনসম্মুখে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকনের নেতৃত্বে কক্সবাজার দক্ষিণ ও উত্তর বন বিভাগের যৌথ অভিযানে এসব বিক্রয় নিষিদ্ধ মাছগুলো জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো পুড়িয়ে ধংস করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।
অভিযানে অংশ নেয়া কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সারোয়ার আলম জানান, সামুদ্রিক হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ ধরা, বিভিন্ন অংশের শুঁটকি করা, মারা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এরপরও প্রশাসনের অগোচরে কক্সবাজার পৌরসভার বিমানবন্দরের পাশে কিছু ব্যক্তি হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ হত্যা করে তেল ও শুঁটকি তৈরি করছেবিষয়টি জানতে পেরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদারের নেতৃত্ব ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকনের দিক-নির্দেশনায় সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ মণ বিক্রয় নিষিদ্ধ হাঙ্গর ও শাপলাপাতা শুঁটকি ও কাঁচা অংশ জব্দ করা হয়েছে। জব্দের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে বিক্রয় নিষিদ্ধ শাপলাপাতা এবং হাঙ্গর কেরোসিন ঢেলে জনসম্মুখে পুড়িয়ে ফেলা হয়।কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার বলেন, বিক্রয় নিষিদ্ধ এসব হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ পরবর্তীতে আর না ধরার শর্তে প্রথমবারের মতো কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরে আর যদি পাওয়া যায় তবে জেল ও জরিমানা করা হবে এসব ব্যবসায়ীদের।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকন বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর তফসিল ভুক্ত সামুদ্রিক হাঙ্গর ও শাপলাপাতার বিভিন্ন অংশের শুটকি করা, ধরা, মারা আইনত দন্ডনিয় অপরাধ।
ঘটনাস্থল গিয়ে আমরা সবাই হতবাক। যেভাবে সামুদ্রিক ভারসাম্য রক্ষাকারি জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা হচ্ছে, তা আমাদের জন্য অশনি সংকেত। কিছু মানুষ লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রকৃতি। প্রকৃতির অমূল্য এসব সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব না হলে সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিপদগ্রস্ত হবে।