নুরুল আমিন হেলালী:

পর্যটন নগরীখ্যাত কক্সবাজারে ভাঙ্গারী ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে চোরের কর্মশালা । এইসব ব্যবসার উপর প্রশাসনের তেমন কোন নজরদারী নেই। ফলে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চোরাই লোহা বিক্রি হচ্ছে ভাঙ্গারী দোকান গুলোতে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শহর থেকে শুরু করে প্রত্যেক উপজেলায় গড়ে উঠেছে শত শত ভাঙ্গারী মালামাল কেনা-বেচার দোকান। এইসব দোকানীর সহযোগীতায় এলাকা ভিত্তিক গড়ে উঠেছে একাধিক চোরের দল। এই চোরের দল বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্যালো যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক মোটর, তার, বৈদ্যুতিক ট্রান্স মিটার, দরজা-জানলার গ্রীল, টিউবওয়েল, টিন, যানবাহনের যন্ত্রাংশ সহ জিনিসপত্র চোরি করে চোরাইপণ্য গুলো দোকানিদের স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে। জানা যায়, একটা না একটা অংশ চোরি হওয়ার কারণে প্রায় হাজারো নলকূপ বিভিন্ন এলাকায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বাড়ি-ঘর ও বিভিন্ন কারখানা সংষ্কার কাজের জন্য রাখা রড, তারসহ লোহা দ্রব্যাদি ও চুরি হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক বাড়ির মালিকের সাথে আলাপে জানা যায়, কিছু মাদক সেবি বাড়ি থেকে যখন নেশার টাকা যোগাড় করতে না পারে তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোহা-লক্ষর চুরি করে। আর চুরি করা মালামাল ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। শহর এলাকার বাসিন্দা রহমত জানান, চিহ্নিত কিছু মাদক সেবি তার বাড়ি থেকে নলকুপের মুখ, লোহার রড সহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়। ঝাউতলা এলাকার এক বাড়ির ভাড়াটিয়া জানান, গতকাল বাসার সামনে থেকেই ছেলের পুরাতন সাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায় কে বা কারা পওে তা এক ভাঙ্গারীর দোকান থেকে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ঈদগাঁও এলাকার একজন টমটম মালিক জানান, কিছুদিন আগে চুরের দল তাহার গাড়ি থেকে ব্যাটারী সহ বিভিন্ন জিনিস পত্র খুলে নিয়ে যায় পরে তা বাসষ্টেসনের এক ভাঙ্গারী দোকান থেকে উদ্দ¦ার করা হয়। অন্য এক গাড়ির মালিক জানান, তার গাড়িটি মেরামতের জন্য বাসষ্টেশনে রাখা অবস্থায় অতিরিক্ত চাকা ও কিছু যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায়। শহরের ঝাউতলা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, এক শ্রেণীর যুবকদের কাছ থেকে তারা লোহাজাত সহ বিভিন্ন দ্রব্য কিনে থাকেন। তবে এগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করে তা তিনি বলতে পারবেন না। আমরা মাল পাই তাই টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে থাকি। এ রকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে জেলার প্রত্যেক উপজেলার আনাছে কানাছে। তবে অভিযোগ রয়েছে এসব চোরদের সাথে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের সখ্যতা আছে। যার ফলে চোরের দল চোরাইপণ্য নির্বিগ্নে বিক্রি করার সুযোগ পায়। বাসা বাড়ির লোহার যন্ত্রাংশ চুরি রুধে এসব ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রশাসনিক নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজেন বলে মনে করেন সচেতন মহল।