এম.এ আজিজ রাসেল:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা যে দেশে গেছে সেখানে থাক। আমাদের দেশে এসেছে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। ভারত সরকারকে আমরা বিষয়টি অবহিত করেছি। বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভারত থেকে কোন রোহিঙ্গা আসতে দেওয়া হবে না। আর আসলেও তাদের পুশব্যাক করা হবে।’
বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির ১৭তম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে বসবাস করে সেজন্য সবকিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পে এপিবিএন অবস্থান কাজ করছে। রাত্রিযাপন যাপন করছে। এখন টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজিবি ও র্যাব প্রয়োজনমাফিক কাজ করছে। বিশেষ প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও কাজ করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক মাদক ব্যবসা যেকোন মূল্যে বন্ধ করা হবে। মাদকের সাথে জড়িত রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশে^ দরবারে মাদার অব হিউম্যানিটি পদে ভূষিত হয়। তারা যেন ক্যাম্পের বাইরে যেতে না তা কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। ভাসানচর অনেক সুন্দরভাবে স্থাপিত হয়েছে। সেখানে ধীরে ধীরে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে যেসব রোহিঙ্গা এসেছে, প্রতি বছর তাদের সংখ্যা ৩৫ হাজার করে বেড়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে। পাঁচ বছর হয়েছে, এতে দেড় লাখ কিন্তু অটোমেটিক বেড়ে গেছে। সেখানেও আমাদের একটি আশঙ্কার জায়গা। সেটা যাতে আমরা ট্যাকেল দিতে পারি, সেজন্য এসব ব্যবস্থার কথা আমরা চিন্তা—ভাবনা করছি। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাটাতারের বেষ্টনী তৈরি করা হবে। যাতে রোহিঙ্গারা বের হতে না পারে। সেখানে পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের পাশাপাশি সিসিটিভি স্থাপন করা হবে।’
এর আগে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির ১৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদ, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ফখরুল হাসান, চট্টগ্রামে রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হাসান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, ও ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক, ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক মো. তারিকুল ইসলাম তারিকসহ সংশ্লিষ্টরা।
সভায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তার আশপাশে এলাকার আইন—শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেস্টনী নির্মাণ, ভাসানচর আশ্রয় প্রকল্পে স্থানান্তর কার্যক্রম, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা এবং এনজিওদের কার্যক্রম ও তৎপরতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া বিগত সভার অগ্রগতি বিষয়ে বিশদ আলোকপাত করা হয়।
এসময় বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।