আব্দুস সালাম,টেকনাফ,(কক্সবাজার):
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের ডাকে সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারের টেকনাফ স্থল বন্দরেও কর্মবিরতি চলছে। মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল ৯ টা থেকে একযোগে সারা দেশের সব শুল্ক ভবন ও স্টেশনে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
ধর্মঘটের কারণে মিয়ানমার থেকে জলপথে টেকনাফ স্থল বন্দরে আসা বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী কার্গো ট্রলার ও জাহাজ থেকে মালামাল ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে ট্রলার-জাহাজের জট। এতে বিপাকে পড়েছে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।
টেকনাফ স্থল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর কর্মবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তাঁরা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মৌলিক অধিকার পরিপন্থী কাস্টমস্ এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এবং পণ্য চালান শুল্কায়নে এইচএস কোড ও সিপিসি নির্ধারণে যেসব বিতর্কিত আইন করেছে, তা বাতিলের দাবিতে এই কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হলে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
স্থল বন্দরের শ্রমিক নেতা জানান, সি এন্ড এফ এজেন্টদের দাবি আদায়ের সারাদিন কাজ বন্ধ রাখায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকেরা। কারণ, মালামাল উঠানামা না হলে অনেকের ঘরে চুলা জ্বলবে না।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ স্থল বন্দরে দেখা যায়, বন্দরের সামনে টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের অর্ধশতাধিক দোকানপাটের অধিকাংশ বন্ধ রয়েছে। বন্দরের প্রধান ফটকে একটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, সি এন্ড এফ এজেন্টদের কর্মবিরতি চলছে। বন্দরের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল, খোলা জায়গা খাঁ খাঁ করছে। অন্যদিন এসব স্থান পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের দখলে থাকে। বন্দরে তেমন কোনো যানবাহন নেই। জেটিগুলো খালি পড়ে থাকলেও নোঙর করে রয়েছে পণ্যভর্তি একাধিক কার্গো ট্রলার ও জাহাজ। এসব ট্রলার ও জাহাজে মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঠ, হিমায়িত মাছ, আদা, সুপারি, উলের ঝাড়ু, নারকেল, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য এসেছে। স্থল বন্দরে বিশাল এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ধরনের কাঠের স্তূপ পড়ে রয়েছে। এসব কাঠ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে সরবরাহ করা হবে।
স্থল বন্দরের শ্রমিকনেতা (মাঝি) আলী আজগর জানান, বর্তমানে স্থল বন্দরের জেটিতে ২৯টি কার্গো ট্রলার ও জাহাজ ভর্তি মালামাল রয়েছে। এসব মালামাল ওঠানামার দায়িত্বে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ শ্রমিক রয়েছেন। সি এন্ড এফ এজেন্টদের দাবি আদায়ের জন্য সারাদিন কাজ বন্ধ রাখায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকেরা। কারণ, মালামাল উঠানামা না হলে অনেকের ঘরে চুলা জ্বলবে না।
স্থল বন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টের লোকজন না আসায় অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থল বন্দরের কাস্টমস্ কর্মকর্তা মো. শাহীন আখতার জানান, আজ সি এন্ড এফ এজেন্টের কর্মবিরতি পালন করায় এক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়নি।