শাহেদুল ইসলাম মনির, কুতুবদিয়া:

৬৫ দিন মাছ ধরা উপর বঙ্গোপসাগরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। কখন অবরোধের সময় শেষ হবে আর কখন সাগরে গিয়ে মাছ ধরে উপার্জনের চাকা সচল করবে সে প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার ছোট-বড় ১ হাজার ট্রলারের অধীনে প্রায় ২০ হাজারের অধীক জেলেরা। এ চলমান নিষিদ্ধ মধ্যে ২০ দিন অতিবাহিত হলেও বাকি রয়েছে আরও ৪৫ দিন। এমন অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম অভাবের মধ্যে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন তারা।

এদিকে,কুতুবদিয়া ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন জানান , উপজেলার ২০ হাজারের অধীক জেলে থাকলেও নিবন্ধিত হয়েছে ১০ হাজার ৯শত ৫৯ জন। তবে এখনো অনেকে নিবন্ধিত হতে পারেনি। সরকারিভাবে দেওয়া সহায়তায় এক মাস কোন রকম চলা যায়। বাকি দিনগুলো অনাহারে কাটাতে হয় জেলেদের। তাছাড়া মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত সকলেই এখন কষ্টে দিনাতিপাত করছে।

শুক্রবার বিকালে অমজাখালীতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক’শ ছোট-বড় ট্রলার ঘাটে নোঙর করে রাখা। জেলেরা বেড়িবাঁধ ও ট্রলারে বসে মাছ ধরার জাল মেরামত করছেন। অন্যদিকে, রোমাই পাড়া,কৈয়ারবিল, আলী ফকির ডেইল,আকবার বলিপাড়া,কায়সার পাড়া,মাতবর পাড়ায় জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে যেতে না পারায় বেড়ীবাঁধ, রাস্তার পাড় কিংবা নদীর কিনারায় বসে জাল বুনে অলস সময় পার করছেন। এদিকে অনেক জেলে সাগরে মাছ ধরতে যেতে না পেরে মহাজনের দাদন আর এনজিওর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অমজাখালী এলাকার জেলে লোকমান হাকিম জানান, দীর্ঘদিন দিন ধরে তিনি জেলে পেশার সাথে জড়িত। পরিবারের একমাত্র ভরসা তিনি। ৬৫দিনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হওয়াতে তার পরিবারে দুর্দিন নেমে এসেছে। খেয়ে না খেয়ে ২০ দিনের অতিবাহিত করেছেন। সামনে কোরবানির ঈদ আরও ৪৫ দিনের মতো বাকি আছে কিভাবে পরিবারের খাবার জোগাড় হবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, জেলেরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সরকারি প্রণোদনা ও সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন। আমরা জেলেদের মাঝে কয়েকদিনের মধ্যে চাল বিতরণ করব।

কুতুবদিয়ার মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মোঃ নাজমুস সাকিব জানান,কুতুবদিয়ার নিবন্ধিত মোট জেলে ১০ হাজার ৯শত ৫৯ জন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সরকারিভাবে জেলেদেরকে দুই ধাপে চাউল দেয়া হবে মোট ৮৬ কেজি। ১ম ধাপে ৫৬ কেজি, ২য় ধাপে ৩০ কেজি। ইতিমধ্যে চাউল দেয়া শুরু হয়েছে।

এ রিপোর্টটি করা পর্যন্ত লেমশীখালী ও কৈয়ারবিলে ১ম ধাপের চাউল দেয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়।