সিবিএনঃ
কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে মোরশেদ আলি ওরফে বলি মোরশেদ হত্যা মামলার নথি জালিয়াতি করে দুই নম্বর আসামি মোহাম্মদ আলি প্রকাশ মোহাম্মদকে কারামুক্ত করার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চারজনের নাম পাওয়া গেছে।
সেখানে একজন আইনজীবী। বাকী ৩ জন দালাল।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত মোরশেদ আলির ভাই ও মামলার বাদি জাহেদ আলি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সুত্র থেকে আমরা চারজনের নাম পেয়েছি। সেখানে একজন আইনজীবীও রয়েছে। রবিবার আদালতে তাদের নাম ঠিকানাসহ জমা দেওয়া হবে।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের জামিননামার আদেশের অনুবলে কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিননামা সম্পাদন করেন এডভোকেট আশীষ বড়ুয়া ও আইনজীবী সহকারী (মুন্সী) মোহাম্মদ সেলিম।
আদালতের নথি জালিয়াতির সঙ্গে দুইজন দালাল জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের একজন সদরের ঝিলংজা লিংক রোড এলাকার। আরেকজনের বাড়ি পিএমখালীর গোলার পাড়া।
স্বীকারোক্তিমূলক একটি অডিও ক্লিপে তাদের নাম প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে, আদালতের নথি জালিয়াতির বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।
সেখানে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আমির হোসাইন জানিয়েছেন, আসামিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য দেশের বিমানবন্দরগুলোতে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
জালিয়াতি করে জামিনপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সতর্ক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
এডভোকেট মোহাম্মদ আমির হোসাইন বলেন, হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি মোহাম্মদ আলি ওরফে মোহাম্মদের স্থলে ২২ নং আসামি (জামিনপ্রাপ্ত) ছেলে মোহাম্মদ ইয়াসিনের নাম বসিয়ে দিয়ে জামিন নেন।
শুধু তাই নয়, রিমান্ডের প্রতিবেদন, এফআইআর, এজাহার ও ফৌজদারি মিস মামলার আদেশ নামাতেও জঘন্য জালিয়াতি করেছে আসামিপক্ষ। যা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননার শামিল। আসামিপক্ষ থেকে মোটা অংক নিয়ে এই জালিয়াতির কাজটি সেরেছেন শক্তিশালী একটি চক্র।
জালিয়াতির বিষয়টি কিভাবে, কখন অবগত হয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এডভোকেট মোহাম্মদ আমির হোসাইন বলেন, কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের মিস মামলা ৩২৫১/২২ নথিতে সব ঠিক আছে। আমরা সব দেখেছি। উচ্চ আদালতের আবেদনের ফাইলে জালিয়াতি করেছে। এতে শক্তিশালী একটি চক্র জড়িত।
তিনি বলেন, আদালতের নথিপত্র জালিয়াতির জামিনে গত ৭ জুলাই কারামুক্ত হন আসামি মোহাম্মদ আলি ওরফে মোহাম্মদ। সে দিনই আমরা অবগত হই। আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল ইফতারের আগ মুহূর্তে মোরশেদ আলিকে জনসম্মুখে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ-যুব লীগের ১০ নেতাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গত ৯ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই জাহেদ আলি। যার মামলা নং- ১৭/২২৭। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১০ জন আসামি রয়েছে।
নিহত মোরশেদ আলি পিএমখালীর মাইজপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মরহুম ওমর আলীর পুত্র।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।