জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়াশরুমে ভুলে ঢুকে এক মেয়ে কে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে তানজিন আল আলামিন নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ -সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং স্যার এ. এফ. রহমান হল ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ এর সভাপতি। বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত।
এদিকে আজ ১৮ আগস্ট (২০২২) বৃহস্পতিবার ইমেইলে অভিযুক্ত তানজিন আল আলামিনের বিরুদ্ধে নারী কে হেনস্থার অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ২০১৮ -১৯ সেশনের ঐ ছাত্রী। হেনস্থার শিকার ছাত্রী সুফিয়া কামাল হলে সংযুক্ত বলে জানা গেছে।
জানা যায় , গতকাল ১৭ ই আগস্ট ( ২০২২) রাত আনুমানিক ৮টা ২০ মিনিটে টিএসসিতে নারীদের জন্য নির্ধারিত ওয়াশরুম ব্যবহারকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান
বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিন আল আলামিন মদ্যপ অবস্থায় নারীদের ওয়াশরুমে প্রবেশ করে একটি টয়লেটের দরজা খোলা রেখে অর্ধনগ্ন হয়ে মূত্রত্যাগ করতে থাকে ।
এ সময় এক ছাত্রী ওয়াশরুমে ঢুকলে তার ভুল ভাঙে।তাই তিনি বের হয়ে মেল ওয়াশ রুমে গিয়ে প্রাকৃতিক ডাক সেরে ফেলেন।
তবে ভুক্তভোগী মেয়ের অভিযোগ, তানজিন আল আলামিন আমার দিকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। প্রচণ্ড ভীত ও উদ্বিগ্ন হওয়ার পরেও ঐ ব্যক্তি বের হয়ে চলে যাওয়ার সময় আমি এবং আমার বন্ধুরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে সে এলোমেলো কথা তাচ্ছিল্যের সুরে বলতে থাকে উপরন্তু,তার ভুল স্বীকার করেনা। এবং তার সাথে থাকা আরও কয়েকজনসহ দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করে চলে যায়। এমতবস্থায় আমি তার দ্বারা হওয়া হয়রানি ও হুমকির প্রেক্ষিতে অনিরাপদবোধ করছি এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। উক্ত এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ তদারকির মাধ্যমে দোষী ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি চেয়ে বিচার প্রার্থনা করছি”।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত তানজিন আল আলামিন বলেন , আমি টিএসসিতে ভুল করে ফিমেল ওয়াশরুমে ঢুকে গিয়েছিলাম। পরে ওয়াশরুমে একটা মেয়ে দেখে আমি ভুল বুঝতে পেরেছি।তাই ফিমেল ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে মেল ওয়াশ রুমে গিয়ে প্রাকৃতিক ডাক সেরে ফেলি। আমি আমার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলাম। মেয়েটি তার বয়ফ্রেন্ডের প্ররোচনায় আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি খুবই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।
আমি দ্রুত প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।
অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডঃ একেএম গোলাম রব্বানীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। অনলাইনে যোগাযোগ করা হলেও
তিনি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করে নাই‌।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তানজিন আল আলামিন কে মাদকাসক্ত ছেলে বলে কখনো মনে হয়নি। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করে এবং নাটকে অভিনয় করে। হয়তোবা ভুলে মেয়েদের ওয়াশরুমে ঢুকে পড়েছে।