নুরুল আমিন হেলালী:

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেদাকচ্ছপিয়া অঙ্গিকার মাঠ এলাকার নিরীহ অসহায় মানুষদের দীর্ঘদিনের বসতবাড়ী দখলের চেষ্টাসহ বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের রোষানল থেকে এসব ভুমিহীন অসহায় পরিবারগুলোর দীর্ঘদিনের বসতভিটা ও মাথাগুজার ঠাঁইটুকু রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বর্ণিত এলাকার অসহায় পরিবারগুলোর নারী -পুরুষ কান্নাজড়িত কন্ঠে এই প্রতিবেদকের কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।
জানা যায়, বর্ণিত এলাকার উমর আলি গং ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ে বসতভিটা হারিয়ে ওই এলাকার পাহাড়ি বনাঞ্চলের জমিতে বসবাস করে আসছেন। পরবর্তীতে তিনিসহ আরও ডজনখানেক পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ ভিলেজার হিসেবে পাহাড়ের পাদদেশে পতিত ভুমিতে হালচাষ ক্ষেত-খামার করে জীবিকা নির্বাহ করে।

গত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ এই নিরহ পরিবারগুলোর ভিটেমাটির উপর স্থানীয় প্রভাবশালী মৃত আবদুল গফুরের ছেলে স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগ নেতা আক্তার কামালের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ওই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বিভিন্ন সময় সেখানে বসবাসকরতে এবং ভিটেবাড়ি নিয়ে থাকতে চাইলে টাকা দিতে হবে অন্যথায় বনবিভাগের সহায়তায় উচ্ছেদসহ জমিদখলের হুমকি ধমকি দেয়। এনিয়ে অসহায় পরিবারগুলোর অভিযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বিচার চলমান বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী মনজুর আলম,আহমদ, সুজন,সাহাব উদ্দীন,আব্দু রহিম, মনিরুল হক ভুট্টা,নুর মোহাম্মদ চৌকিদার জানান,স্থানীয় একটি দুস্কৃতিকারী চক্র আমাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় বসতবাড়ীর জমি দখলের জন্য নানাভাবে হুমকী-ধামকী দিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবী করিয়া আসছিল। এনিয়ে চরম আতংকের মধ্যে দিন কাটছে এই পরিবার গুলোর।

অভিযোগ উঠা আক্তার কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি এক জন সমাজ সেবক, এইখানে আমার কোনো জমি নেই এবং আমি কোনো অর্থ দাবী করি নাই। এমনকি তাদেরকে আমি বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করেছি। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মুলক ভিত্তিহীন অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা মাঈন উদ্দীন, রাশেদ,ওমর আলী, আনোয়ার হোসেন, হেলাল উদ্দিনসহ অনেকে জানান,এই জায়গায় বাপ-দাদার আমল থেকে ভিলেজার হিসেবে তারা এইখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু এই দুর্গম এলাকায় রেলের রাস্তা হওয়ার কারনে জমির দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় প্রভাবশালী ভুমিদখল ভাজদের শকুন দৃষ্টি পড়ে। এজন্য তাদেরকে স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট মামলা হামলাসহ বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে নিজেদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী এলাকার সচেতন মহল জানান, দীর্ঘবছর ধরে এই জায়গায় ওমর আলি গং বসতি স্থাপন করে, ক্ষেত খামার করে, মসজিদ মাদ্রাসা স্থাপন করে প্রায় ডজনখানেক পরিবার শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছে। রেল লাইনের সুবাদে জমির দাম জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই বলে তাদের দীর্ঘদিনের ভিটেবাড়ির দখল কিংবা উচ্ছেদের হুমকি ধমকি দেয়া দুঃখজনক।
এই অসহায় পরিবার গুলোর জীবনের নিরাপত্তাসহ নিজেদের জন্মভিটে রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।