শেফাইল উদ্দিনঃ
দলের হাইকমান্ড চাইলে নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমদ।

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন বড়ই অসহায়। তাদের আশ্রয় দেয়ার মত কেউ নেই। নেতাকর্মীদের মধ্যে মিলামিল না থাকায় সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছে না। নেতাদের কথাবার্তায় কোন রূপ আস্থা রাখতে পারছেন না তৃণমূলের কর্মীরা।
তারা নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্ব চান।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ভরষা স্থল হিসেবে যোগ্য অভিভাবক থাকা দরকার।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরীতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আকাঙ্ক্ষার কথা জানালেন কর্নেল ফোরকান।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সভানেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীকে তাকে মনোনয়ন দিলে দলীয় নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সর্বস্তরের গণমানুষের সমর্থন নিয়ে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন ও এলাকাবাসীর কল্যাণে কাজ করে যাবেন বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমদ।

তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্বাচিত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে কথা বলেছি। তাদের সকলের চাওয়া পাওয়া এক ও অভিন্ন। তাই দলের বৃহত্তর স্বার্থে সকলকে একই মতে আসতে হবে। উন্নয়নের ব্যাপারে কোন আপোষ চলবে না।

ফোরকান আহমদ আশা করেন, আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৫ ইউনিয়ন থেকে একমাত্র মনোনীত এ সদস্য বলেন, পরিবর্তন ও উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে এক কাতারে আসতে হবে।

কউকের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, সর্বক্ষেত্রে ঈদগাঁওবাসী অনেক পিছিয়ে আছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে। নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেয় এমন নেতা তুলে আনতে হবে।

স্থগিত হওয়া ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তালিকায় দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেয়া হয়েছে। নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য দেরিতে কাউন্সিলর লিস্ট জেলা কমিটিকে জমা দেয়া হয়েছে। সময় মত এ তালিকা জমা না দেয়ায় তাদের প্রস্তুতিতে বিরাট অপ্রতুলতা ছিল।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, কাউন্সিলে প্রার্থীদের প্রতীক দেয়া হয়নি। ব্যালট পেপার ও ছাপানো হয়নি। অনিয়ম ও অনৈতিকে ভরা ছিল সম্মেলন ও কাউন্সিলের সার্বিক কার্যক্রম।

প্রশ্নের জবাবে ফোরকান আহমদ জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তার নির্বাচন করার কোন মন মানসিকতা নেই। পদ-পদবি পাওয়ার জন্য তার কোন ইচ্ছে নেই। যেহেতু তিনি দল, সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুগত, সেহেতু দলের হাই কমান্ড কিংবা জেলা কমিটি চাইলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের হাল ধরতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত আছেন।

অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, স্থগিত হওয়ার পূর্বে সম্মেলনের তারিখ কয়েক দফে পরিবর্তিত হয়েছে। নানা চাপের মুখে জেলা কমিটি সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করতে বাধ্য হন। তবে ১২ সেপ্টেম্বর কাউন্সিল ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এক প্রকার ভালো হয়েছে।

ফোরকান আশা করেন, দলের নেতৃবৃন্দের কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকতে হবে। তাদের চিন্তা ও কর্ম সঠিক হতে হবে। সকালে এক কথা, দুপুরে আরেক কথা এবং সন্ধ্যায় অন্য কথা বলা যাবে না। নেতাদেরকে কর্মীদের আস্থা ও বিশ্বাসভাজন হতে হবে।

তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপির জন্য তিনি একদিনেই ১১টি সভায় যোগদান করেছেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য ডাক্তার সাইফুদ্দিন ফরাজি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল আজিম, ঈদগাঁও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী মিন্টু, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোজাহের আহমদ, জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল জাহান চৌধুরী, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সনজিৎ দাস, ঈদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি তারেক আজিজ, জালালাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সেলিম মোর্শেদ ফরাজি, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, জালালাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মেম্বার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহীন কোম্পানি, কামরুল হাসান বাবু, বিশিষ্ট পরিবহন শ্রমিক নেতা ইউসুফ ড্রাইভার, সাবেক মেম্বার জয়নাল আবেদীন, সাবেক এমইউপি সেলিম উল্লাহ সিরাজী, কৃষক ও উদ্যোক্তা রহিম উল্লাহ, ইসমাইল হোসেন ভান্ডারীসহ উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।