– এম আর মাহমুদ

একজন জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা যিনি জেলায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন-বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত ছাড়া সংরক্ষিত বনভূমি দখল ও বৃক্ষনিধন কোনদিনই সম্ভব হয় না।

অপরদিকে তহসিলদারের সহযোগীতা ও অর্থপূর্ণ উদারতা ছাড়া সরকারি খাস জমি, নদীর কূল, জলাশয়, ডোবা, খাই দখল করা যায় না। এছাড়া পুলিশ ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা ছাড়া কেউ রাতারাতি এরশাদ সিকদার বা দুর্দর্ষ সন্ত্রাসী, মুকিম গাজী হতে পারে না।

প্রসঙ্গক্রমে না বললে হয় না- চকরিয়ার আলোচিত উপকূলীয় জনপদ বদরখালীর বর্তমান অবস্থা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সমবায় সমিতি কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি হিসেবে সমাদৃত। ১৯২৯ সালে সমিতিটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যার আওতাধীন প্রায় ৬০ হাজার জনগোষ্ঠীর বসবাস। সমিতি ব্যতিত ওই এলাকায় কারো ব্যক্তি মালিকানায় কোন ভূ-সম্পত্তি নেই। তৎকালীন ২৬২ জন ব্যক্তি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশ সমাদৃত এ সমিতি প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠাতাকালীন কোন ব্যাক্তি বর্তমানে বেঁচে নেই।

তবে, তাদের গড়া প্রতিষ্ঠানটি স্বর্ণের ডিম পাড়া হাঁসে পরিণত হলেও বর্তমানে অযোগ্য, অশিক্ষিত, দখলবাজ, ভূমিদস্যু ব্যাক্তি দ্বারা সমিতিটি পরিচালিত হয়ে আসছে। যে কারণে তিঁলে তিঁলে গড়া সমিতির অতীত ঐতিহ্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।

উল্লেখ্য যে, সমিতির সভ্যদের পোষ্য ও অংশিদারেরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে দখলবাজ, ভূমিদস্যুদের কারণে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত চলছে খাস জমি দখলের মহোৎসব।

এদিকে উপজেলা প্রশাসনও সরকারি জমি উদ্ধারে বসে নেই। তারপরও দখলবাজরা থেমে নেই। তাদের কোমরে অনেক শক্তি। প্রশাসন কর্তৃক দেয়া খাস জমিতে লাগানো সাইন বোর্ড গায়েব করেছে দখলবাজ চক্ররা। অবস্থা দেখে মনে হয় ওই দখলবাজ চক্র প্রশাসনের চেয়ে বড়ই ক্ষমতাবান। হয়তো প্রশাসন দখলবাজ চক্রের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মামলা দায়ের করতে বাধ্য হবে। তখন দখলবাজরা বুঝতে পারবে কার কোমরে কত শক্তি।

অপরদিকে, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির বহু কাঙ্খিত নির্বাচন। সেই নির্বাচনে সমিতির সভ্যরা যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে ব্যর্থ হলে পুরো সমিতির সভ্য ও পোষ্যদের অনেক মাসুল দিতে হবে। আগামীতে বদরখালী সমিতির মালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে মাতারবাড়ি-বদরখালী-চকরিয়া একটি নতুন সড়ক নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই সড়কটি জাইকা’র অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে। এতে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে বদরখালীবাসী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই চিন্তা কি সমিতি কর্তৃপক্ষ করছে! অথচ তারা রয়েছে খাস জমি দখলের মহোৎসবে। সেই পুরানো বাণী স্মরণ করে দিতে হচ্ছে ” রোম পুড়ছে নিরো প্রাসাদে বসে বাঁশি বাজাচ্ছে “। সব কথার শেষ কথা স্বর্ণের ডিম দেওয়া হাঁসটি জবাই করে খাবেন না প্লিজ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখাটি নিয়ে কারো অনুভুতিতে আঁচড় লাগলেও সমিতির বৃহত্তর স্বার্থে বিবেকের তাড়নায় হজম করুন।