রাজু দাশ ,চকরিয়া:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের এ উৎসব আনুষ্ঠানিকতা শুরু। এ উৎসবকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে উৎসবের আমেজ।

আজ শনিবার (১ অক্টোবর) ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সকালে বেল গাছের নিচে বিল্লে ষষ্ঠী পালন করা হয়েছে। সন্ধ্যাকালে হবে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। ঢাকের বোল, মন্ত্র, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে কেঁপে উঠবে মন্দির পূজামণ্ডপ গুলোতে। ২ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ৩ অক্টোবর মহাষ্ঠমী ও কুমারী পূজা, ৪ অক্টোবর মহানবমী শেষে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব।

চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, প্রতিমা ও ঘট পূজাসহ মোট ৯১ টি পূজা মন্ডপে দূর্গোৎসব পালিত হবে চকরিয়ায়। তন্মধ্যে প্রতিমা পূজা ৪৮টি আর ঘট পূজা ৪৩টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে।
পূজায় ৫ দিনের অনুষ্ঠান সূচিঃ দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে আজ শনিবার ১অক্টোবর মহাষষ্ঠী। উৎসবের প্রথম দিন সকাল সাড়ে ৯টায় কল্পারম্ভ এবং বোধনের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠীপূজা শুরু হবে। সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠীপূজা সম্পন্ন হবে। এদিন সকাল থেকেই প্রতিটি পূজামণ্ডপ চণ্ডীপাঠে মুখরিত থাকবে। সন্ধ্যায় পূজার মণ্ডপে ভক্তিমূলক গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে বিগত দুই বছর সরকারের স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে উদযাপন করা হয়েছে। এবার সেই করোনার সংকট কাটিয়ে বর্তমানে করোনা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ব্যাপক ভাবে এই দূর্গা পূজা পালন করা হচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কান্তি দাশ বলেন, দুর্গোৎসব যেন সবাই নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারেন, তার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নিয়েছেন। আজ থেকে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হল। তবে আমরা তো শুধু মায়ের আরাধনাই করি না, একইঙ্গে ভাতৃত্ব আর প্রীতির বার্তাও ছড়াতে চাই এই পূজা উৎসবের মাধ্যমে। সমৃদ্ধি কামনা করি দেশ ও জাতির। দশভূজা দুর্গার শক্তি রূপের আরাধনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবার ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সহিংসার বিনাশ চেয়ে ‘বিশেষ প্রার্থনা’ করবে বলেও জানান।

তিনি আরো জানান, গত বছর ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দূর্গোৎসবের সময় সারাদেশে পুজা মন্ডপ, সনাতনী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ভাংচুরসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এর থেকে বাদ যায়নি চকরিয়া- পেকুয়াও। এবারে দুর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজা। গত বছরের মতো যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রতিটি পুজা মন্ডপে আনসার মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি টহলে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতি বছর সরকারীভাবে যে বরাদ্দকৃত ৯১টি মন্দিরের পূজা মন্ডপ প্রতিমা পূজা ৪৮টি আর ঘট পূজা ৪৩টি সভাপতি /সম্পাদকের মাঝে অনুদান প্রদান করা হয়েছে।