মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় দলছুট একটি বন্যহাতি একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে জান মালের ক্ষতি করে চলেছে। কিছুতেই রক্ষা পাচ্ছেনা স্থানীয়রা। গত ৪ নভেম্বর দলছুট হাতিটি আজিজনগর ইউনিয়নের সোহরাব, মগ বাজার ও জামাল পাড়ায় আক্রমণ চালায়। এতে সোহরাব পাড়ার বাসিন্দা মৃত ফজর আলীর স্ত্রী খোদেজা বিবি (৬৫) ও মগবাজার পাড়ার বাসিন্দা মৃত মাঈন উদ্দিন গাজীর ছেলে আমির আলী (৫০) নিহত হন, আহত হন মোজাম্মেল হক বয়াতী (৬৫) নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনার তিন দিন পর সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১০টার (৭ নভেম্বর) দিকে পাশের ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া এলাকার একটি খামার বাড়িতে ফের আক্রমণ চালায় ওই হাতিটি। এতে চিংসাথুই মার্মা (৪৫) নামের এক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায় নিহত হন। চিংসাথুই মার্মা ফাদুর ছড়া পাড়ার বাসিন্দা চিংমউ মার্মার ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিংসাথুই মার্মা ফাদুরছড়াস্থ নিজ বাড়ি থেকে খামার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় দলছুট ওই হাতির কবলে পড়েন চিংসাথুই মার্মা। পরে হাতিটি আঁচাড় মারলে চিংসাথুই মার্মা গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কাছাকাছি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এক পর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিংসাথুই মার্মা মারা যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক জানান, ঘটনাটি খুবই মার্মান্তিক। বর্তমানেও দলছুট হাতিটি বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরাফেরা করার কারণে এলাকার মানুষ হাতি আতংকে আছেন।

এদিকে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাতির আক্রমণে নিহত চিংসাথুই মার্মার স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলাল জানায়, বন্যহাতির আক্রমণে নিহত চিংসাথুই মার্মার পরিবারকে বন বিভাগের বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া দলছুট হাতিিিটকে সরিয়ে নিতে ঘটনাস্থলে বনবিভাগের লোকজন ও ‘হাতি রেসপন্স টিম’ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।