বার্তা পরিবেশক
“শিশু-কিশোরদের সুকুমার বৃত্তির বিকাশে এগিয়ে যাই, মেধা ও মননে সাহিত্যের বিকল্প নাই” এই শ্লোগানকে ধারণ করে ‘শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল সাহিত্যচর্চায় উদ্বুদ্ধকরণ ও শিশুদের প্রতিভা অন্বেষণ’-এর জন্য কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ব্যতিক্রমধর্মী সাহিত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১০ নভেম্বর, ২০২২ বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরতলীর আলহাজ্ব ফাতেমা ফেরদৌস উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার ও কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সহ-সভাপতি ছড়াকার মো. নাসির উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তবে মো. নাছির উদ্দিন বলেন, আজকের শিশুরা আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক। তাই আজকের শিশুদেরকে আদর্র্শ ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আর সে কারণেই শিশুদেরকে পড়ালেখার পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে একাত্ম হয়ে গড়ে তুলতে হবে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশছাড়া একজন শিশু আদর্শবান মানুষ হতে পারে না। তাই সকল শিশুদের অভিভাবদের উচিত তাদের শিশুদেরকে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চায় মনযোগ দেওয়া।
তিনি বলেন, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমী দায়িত্ব নিয়ে শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি অন্যতম। এতে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে সাহিত্য মনস্ক করে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা শিশু-কিশোরদের এভাবে গড়ে তুলতে স্কুল পর্যায়ে গিয়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করেন আলহাজ্ব ফাতেমা ফেরদৌস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব আলী আকবর।
একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের স্বাগত বক্তব্যের পরে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন বীচ পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক কবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাংবাদিক ইমাম খাইর ও একাডেমীর প্রচার ও অফিস সম্পাদক কবি আজাদ মনসুর।
প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচির মধ্যে ছিলো স্বরচিত-ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প লিখন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। এবারের প্রতিযোগিতা প্রাথমিক স্তরের ৩য় শ্রেণি থেকে শুরু মাধ্যমিক স্তরের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ‘ক গ্রুপে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ‘খ’ গ্রুপে ও ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ‘গ গ্রুপে বিভক্ত করে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ক গ্রুপে জহির ইসলামের ‘আঁকতে পারি ‘খ গ্রুপে ছড়াকার রুহুল কাদের বাবুলের ভাষার ‘পদাবলী ও ‘গ গ্রুপে জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার ‘যতদূর বাংলাভাষা ততদূর বাংলাদেশ’ কবিতা আবৃত্তির জন্য নির্বাচিত করা হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এবারের আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার জেলার কবি ও ছড়াকারের লেখাকে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন যথাক্রমে একাডেমীর সধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল, একাডেমীর প্রচার ও অফিস সম্পাদক কবি আজাদ মনসুর ও সাংবাদিক ইমাম খাইর।
প্রতিযোগিতায় আলহাজ্ব ফাতেমা ফেরদৌস উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদেরকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়।
প্রতিযোগিতায় ‘খ’ গ্রুপে স্বরচিত কবিতা-ছড়া লিখায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির রায়হান আবদুল্লাহ প্রথম, ৮ম শ্রেণির হাইর হোসাইন দ্বিতীয় ও ৮ম শ্রেণির মিফতাউল জান্নাতুল ফেরদৌস ও ৭ম শ্রেণির মুনতাসির মো. জাইদূ যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে। স্বরচিত গল্প-প্রবন্ধ বিভাগে ৭ম শ্রেণির আফসানা সুলতানা প্রথম, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ফজিলাতুন্নেছা চৌধুরী ইবরার দ্বিতীয় ও ৭ম শ্রেণির ফাইজা জান্নাত তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া কবিতা আবৃত্তিতে ৮ম শ্রেণির জান্নাতুল ফেরদৌস আখি প্রথম, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ফজিলাতুন্নেছা নেছা ইবরার দ্বিতীয় ও ৮ম শ্রেণির নাবিলা নূর শিফফা তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
প্রতিযোগিতায় ‘গ’ গ্রুপে স্বরচিত গল্প-প্রবন্ধ লিখন বিভাগে ৯ম শ্রেণির হালিমা আক্তার বিজল প্রথম, ৯ম শ্রেণির সিদরাতুল মুনতাহা দ্বিতীয় ও ৯ম শ্রেণির হাসিবান সরওয়ার সাইমা চৌধুরী তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া কবিতা আবৃত্তিতে ৯ম শ্রেণির আফরোজা সুলতানা নোভা প্রথম, ৯ম শ্রেণির শিমু আকতার দ্বিতীয় ও ৯ম শ্রেণির তাসনিম সুলতানা জিহান তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
পরে প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
বার্তা প্রেরক
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।