আবদুর রহমান খান
সত্যিকারের স্বাধীনতার ডাকে পরিচালিত লংমার্চে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ ( পিটি আই) প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক সপ্তাহ পূর্বে যেখানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, পাঞ্জাবের সেই ওয়াজিরাবাদ চকে লাখো মানুষের শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত জমায়েতে ইমরান খান দৃঢ়ভাবে ঘোষনা করেছেন, লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত এ ঐতিহাসিক পদযাত্রা থামবে না।
লাহোর থেকে লাইভ ভিডিও ভাষনে ইমরান এক সপ্তাহ বিরতির পর ওয়াজিরাবাদ থেকে লং মার্চের পুনঃযাত্রা ঘোষনা করেন । দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে কর্মী-সমর্থকগন এ লং মার্চে যোগ দিয়েছে। সাবেক মন্ত্রী পিটিআই নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশী লং মার্চে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এ সময় ইমরান খান তার অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, গত বৃহস্পতিবার ( ০৩ নভেম্বর ) ঠিক এই স্থানে তার ওপর পরিচালিত বন্দুক হামলার মুল পরিকল্পনাকারী হচ্ছে দেশের প্রধান মন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (আই আস আই) প্রধান মেজর জেনেরেল ফয়সাল নাসের। তিনি জানান, এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যা প্রচেষ্টা। গত ২৪ সেপ্টেম্বর আমি প্রকাশ্য জনসভায় বলেছিলাম, আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উগ্র ধর্মীয় গোষ্টিকে এ জন্য দয়ী করা হবে বলে আগাম পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিকে পাঞ্জাবের চিফ মিনিস্টার পারভেজ এলাহী লং মার্চে অংশগ্রহকারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের যে সব শহর এবং রাস্তা দিয়ে লং মার্চ অতিক্রম করবে তার উভয় পার্শে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করতে দেড় হাজার পুলিশ এবং বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্নাইপার শুটার মোতায়ন করা হয়েছে । প্রতিটি স্থানে সভা মঞ্চ এবং নেতাদের বহনকারী অগ্রগামী কন্টেইনারকে ঘিরে বুলেট প্রুফ ঢাল নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লং মার্চের পুরো বহরকে সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে মনিটরিং কয়া হবে।
ওদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ মুসলিম লীগের স্থানীয় নেতা এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের অনুরোধ করেছেন, লংমার্চে রাস্তাঘাট বন্ধ হবার ফলে অসুবিধার সন্মুখীন সাধারন মানুষদের সহায়তায় তারা যেন এগিয়ে আসেন। আজ এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, পি টি আই কর্মী-সমর্থকগন প্রশাসনের সহায়তায় এবং পুলিশের পাহাড়ায় রাস্তা বন্ধ রেখে জন-দুর্ভোগ সৃষ্টি করহে। এখন জনগনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে পরার উপক্রম হয়েছে।
সকারের তথ্য মন্ত্রী মরিয়াম আওরাংগজেব বলেছেন, ইমরান খানের লক্ষ্য হচ্ছে জঙ্গনের মাঝে ঘৃনা ছড়িয়ে , বিশৃংখলা আর হাঙ্গামা বাধিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। লং মার্চের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে । শিক্ষার্থীদের পড়া লেখায় বিঘ্ন ঘটছে । অসুস্থদের নিয়ে স্বজনেরা হাসপাতালে যেতে পারছেনা। তিনি বলেন, সমাবেশের নামে যে পরিমান অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তা দিয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষকে পুনর্বাসন করা যেত।
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য হেনা পারভেজ ইমরান খানকে “ফিতনা খান “ অভিহিত করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তার গ্রেপ্তার দাবী করেছেন।
ওদিকে, আজ বিকেলে ওয়াজিরাবাদে লংমার্চ পুনরায় শুরু হবার আগে জনতার সমাবেশে পিটিআই নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশী হলেছেন, গুলি চালিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের আহত করেও এ পদযাত্রা প্রতিহত করা যায় নি। আজ আমাদের সামনে কোন বিকল্প নেই। বুলেট প্রুফ গ্লাসের আড়ালে দাঁড়িয়ে নয়, সামনে দাঁড়িয়ে ওদের চোখে চোখ রেখে বলতে চাই, তেহরিক-ই ইনসাফ পার্টি গুলির কাছে মাথা নত করে নি। এবং যে পরিণতিই আসুক আমরা লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।