যে বয়সে খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে ছেলেদের সময় কাটে, সে বয়সে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত ৩০ পারা পবিত্র কোরআন নির্ভুলভাবে মুখস্থ করেছে কিশোর মিফতাহুল করিম তামী’ম। তাও মাত্র আড়াই বৎসরে। উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের মহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে হাফেজ মাওলানা মতিউর রহমানের তত্ত্বাবধানে পবিত্র কোরআন মাজিদ মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন।

মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের দ্বীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে এত অল্প দিনে কোরআন শরিফ হেফজ করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মিফতাহুল করিম তামী’ম এর শিক্ষকরা। কোরআন শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায়ও চমকপ্রদ ফলাফল করে চলেছে মাত্র ৯ বছর বয়সী মিফতাহুল করিম তামী’ম। সে ছোট মহেশখালী মহি-উস সুন্নহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের কৃতি ছাত্র।

মিফতাহুল করিম তামী’ম মহেশখালী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মাওলানা মরহুম শফিকুল্লাহ খানের নাতি ও দৈনিক দেশবাংলা মহেশখালী প্রতিনিধি নুরুল করিম এর পুত্র এবং জাতীয় দৈনিক আজকের সংবাদ ও দৈনিক রূপালী সৈকত পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার বদরুন্নেছা সুখি (হ্যাপী করিম) এর একমাত্র পুত্র। তার গ্রামের বাড়ি কুতুবজোম ইউনিয়নের খোন্দকারপাড়ায়। তাঁহার নানা সাংবাদিক মাওলানা মরহুম শফিকুল্লাহ খানের হাতেই প্রথমে চট্টগ্রামে হেফজ শিক্ষা শুরু হলেও করোনাকালীন বন্ধে, একান্ত প্রচেষ্টায় তাকে ছোট মহেশখালী মহি-উস সুন্নহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ভর্তি করা হয়। যার ফলে সে অল্প বয়সে ২৩ মাসে কোরআনের হাফেজ হয়ে মা-বাবা’সহ শিক্ষকদের মন জয় করেন। মরহুম নানার স্বপ্ন পুরনে, আজ নানা বেঁচে থাকলে হেফজ সম্পন্নে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। তামী’ম নানার আদরের নাতি ছিলেন।

হাফেজ মাওলানা মতিউর রহমান বলেন, তাঁর নানা রমজানের করোনা সময় চট্টগ্রামের হেফজ বিভাগের বন্ধ কারনে তামী’ম’কে আমাদের মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে চট্টগ্রামে চলে যান মাত্র ১৩ দিন পর হঠাৎ সাংবাদিক মাওলানা শফিকুল্লাহ খানের মৃত্যুর সংবাদে গভীর শোকাহত হয়। ‘আমি অনেক ছাত্র পেয়েছি। মিফতাহুল করিম তামী’ম মতো পাইনি। তার মেধায় জাদুকরি শক্তি আছে। পড়া দেওয়ার সাথে সাথে মুখস্থ করে ফেলে। শিক্ষক ডেকে হাজিরা দেয়। চমৎকার সুশৃঙ্খল, অমায়িক ও মার্জিত হওয়ায় তার প্রতি সবার আকর্ষণটা আলাদা। সাধারণ ছাত্রদের চেয়ে ভিন্ন। সাদাসিধে মিফতাহুল করিম তামী’মের জীবন অনেক সম্ভাবনায় ভরা।

শিক্ষকরা আরো বলেন, সব ছাত্র যখন গভীর রাতে ঘুমিয়ে থাকে, ওই সময়েও উঠে পড়তে দেখেছি মিফতাহুল করিম তামী’ম’কে। সবার আগে পড়া হাজিরা দেওয়ার প্রবল জেদ ছিল তার ভেতরে। ছিল না ফাঁকিবাজির চরিত্র। আচরণ ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো। আমল-আখলাকে পরিপূর্ণ এই ছেলেটি অনেক বড় হবে। তার জন্য অপেক্ষা করছে স্বর্ণালি সময়।

হাফেজ মিফতাহুল করিম তামী’ম এর পিতা জানান, ১ ই ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ভোর ৪ টা ৪৫ মিনিটের সময় মোবাইল ফোনে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মতিউর রহমানের সু-সংবাদে মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে লক্ষ কোটি শুকরিয়া আদায় করেন পরিবারের পিতা-মাতা,দাদি, নানি ও মামা’রা একমাত্র ভাগিনা মিফতাহুল করিম তামী’মের সাফল্যে শুকরিয়া ও পরিবারের মনের আশা পুরনে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ ও হাফেজ সাহেব এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আমি চাই আমার একমাত্র ছেলে একজন হক্কানী আলেম হোক। তার লেখা পড়ার পাশাপাশি যা প্রয়োজন তা আমি বহন করে যাচ্ছি। তাই আমি আমার ছেলের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী আল্লাহপাক যেন আমার ছেলেকে দ্বীনদার আলেম বানিয়ে দেন-আমিন।