মোঃ কাউছার উদ্দীন শরীফ, ঈদগাঁও:

জাল টাকা নিয়ে প্রতি মুহূর্তে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জাল টাকা বা বৈদেশিক মুদ্রাচক্রের সাধারণ সদস্যরা ধরা পড়লেও বহাল তবিয়তে রয়েছে টাকা লগ্নিকারী ও হোতারা। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরে থেকেও বিপুল পরিমাণ জাল নোট আসছে। শুধু ঈদগাঁও উপজেলার নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর জন্য গ্রাম এলাকাগুলোতে গড়ে তুলা হয়েছে জাল টাকার কারখানা। মূল হোতারা দেশের বাইরে থেকে জাল নোটের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। এই চক্রের অনেক সদস্যই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে খুচরা পণ্যের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই অপরাধ করে যাচ্ছে। তারা শুধু নিজ দেশের টাকা নয়, পার্শ্ববর্তী দেশের নোট তৈরি করে দালালের মাধ্যমে পাশের দেশে সরবরাহ করে যাচ্ছে। জাল নোট চক্রের সদস্যরা মাঝে মধ্যে ধরা পড়ার পর মামলা হলেও তদন্ত বেশি দূর এগোয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, জাল টাকা বা জাল রুপী-এটা অর্থনীতির জন্য খুবই ভয়ংকর। জাল টাকা ও আসল টাকার মধ্যে যদি পার্থক্য না করা যায়। এর ফলে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, অন্যদিকে এ টাকা দেশের ক্ষতি ও সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ গোলাম কবির দৈনিক আজকের বসুন্ধরা কে বলেন, জাল নোট কারবারিদের গ্রেফতার সক্রিয় রয়েছে পুলিশের একাধিক টিম। এর সাথে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা যাতে দ্রæত জামিনে বেরিয়ে আসতে না পারে সে জন্য কাজ করা হচ্ছে।

দেশের শপিংমল, খুচরা বাজার এমনকি ব্যাংকে জাল টাকার ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকের। কিন্তু জাল টাকা বানানোর কারিগরদের কাছে এটা খুবই সহজ কাজ। অল্প পুঁজি আর লাভও বেশি। শুধু গ্রেফতার নয়, আইনের মাধ্যমে এদের বিচার করা সম্ভব না হলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

জাল টাকা ব্যবসায়ী দুইজন যখন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যায়, তখন ওই পরিবারের অন্য সদস্যরা এ ব্যবসায় যুক্ত হয়ে পড়ে। যদি কারো স্বামী পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তাহলে তার স্ত্রী বা ভাই অথবা বোন যুক্ত হয়ে যাচ্ছে জাল টাকা ব্যবসায়। আবার পিতা ধরা পড়লে তার সন্তানরা ক্রমান্বয়ে জড়িয়ে পড়ছে এ কাজে। এতে জাল টাকার ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না।

গত শুক্রবার ১৭ মার্চ কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও বাস স্টেশন থেকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।তারা হলেন,ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের তেলি পাড়া এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে নুরুল হোসেন, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ইউছুপেরখীল এলাকার ইমাম শরীফের ছেলে আব্দু রশিদ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১২ হাজার জাল টাকা জাল টাকা উদ্ধার করে। ঈদগাঁও থানা পুলিশ ১২ হাজার জাল টাকার নোটসহ দুইজন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। এসময় পুলিশের অভিযান টের পেয়ে কয়েকজন পালিয়ে যায়।

কক্সবাজারসহ জনবহুল এলাকায় খুচরা জাল টাকার নোটের ব্যবসা চলছে। তাদের দেশের বড় জাল টাকার কারিগর বলে মনে করা হয়। কিন্তু এদের গডফাদার বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।