নুরুল আলম সাঈদ,নাইক্ষ্যংছড়ি :
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মায়ানমারের গরু পাচার থামছে না। মায়ানমারের অবৈধ এই গরু পাচারকে কেন্দ্র করে প্রতি দিন ঘটছে ছিনতাই,ডাকাতি ও গোলাগুলির ঘটনা। গরু পাচারকারীরা পুলিশকে বেধে রেখে মারধর পূূর্বক গরু ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটায়। প্রতিদিন পুলিশ-বিজিবি
প্রচুর পরিমাণে গরু জব্দ করে মামলা দিলেও গরু পাচার থামছে না।
সর্ব শেষ ২৯ মার্চ (বুধবার) রাত ১০ টায় নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি দিয়ে পাচার হয়ে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে পাচারকালে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ১
নং ওয়ার্ডের সংবদ্ধ প্রভাবশালী কিছু দুষ্কৃতকারীরা বাকখালী ও দোছড়ি খালস্থ টেকপাড়া নামক স্থানে মোঃ মাহাবুব আলম (৩৫)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে
আহত করে। এই সময় ডাকাত দল ৬ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। অস্ত্রের মূখে ডাতাত দল পাচারকৃত মায়ানমারের ২৪ টি গরু ছিনিয়ে নেয় । উক্ত ঘটনায় ১ জন আহত হয় । আহত ব্যক্তি রামুর কচ্ছপিয়ার বালুবাসার মৃত আব্দু রশিদের পুত্র মাহাবুব আলম। আহত ব্যক্তিকে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশংকা জনক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাহাবুবকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে আহত মাহাবুব আলম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা যায়। গুলিবিদ্ধ ও দারালো ছুরিতে আঘাত প্রাপ্ত মাহাবুবের অবস্থা আশংকাজনক ।
উল্লেখ্য, রামু কচছপিয়ার হাজীর পাড়ার বহুল আলোচিত কয়েক ব্যাক্তি অবৈধ পন্থায় মিয়ানমার হতে ২৪ টি বার্মিজ গরু চোরাইপথে পাচারকাল আকস্মিক দুষ্কৃতকারীর দল গুলি করে ২৪ টি গরু ছিনিয়ে নিয়ে যায় । পরবর্তীতে এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করলে মুসল্লিরা এগিয়ে এলে ১৫ টি গরু উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এবং কিছুক্ষন পরে ঘটনাস্থলে গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়ি থেকে পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয় বলে জানা যায়।উক্ত ঘটনার পর থেকে ঐ এলাকা থমথমে অবস্থা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য যে,বিগত প্রায় ১বছর যাবত নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৩,৪৪,৪৫,৪৬ ও ৪৭ সীমান্ত পিলার এলাকার জারুলিয়াছড়ি,ফুলতলী,জামছড়ি,দক্ষিন
চাকঢালা,পাইনছড়ি,বাইশারী,ফাত্রাঝিরি,তুমরু এলাকা দিয়ে প্রতিদিন দিনে- রাতে সমান তালে ৪’শ থেকে ৫’ শ মায়ানমারের গরু বাংলাদেশে অবৈধ ভাবে
প্রবেশ করছে। মায়ানমারের সীমান্তের ছিকনছড়ি ও সেঞ্চুরি শহরের দু’ চেয়ারম্যান থাইল্যান্ড থেকে মায়ানমারে ব্রাহামা জাতের এই গরু বাংলাদেশের
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের বিক্রি করে দিচ্ছে। এই গরু পাচারকারীরা সরকারকে কোন রকম রাজস্ব না দিয়ে প্রতি
দিন সুযোগ বুঝেঁ দিনে রাতে সমান তালে মায়ানমার থেকে গরু নিয়ে আসছে বাংলাদেশে। সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকা রাজস্ব । মায়ানমারের গরু পাচারের
ফলে দেশীয় এই স্থানীয় গরুর খামারীরা পড়েছে চরম বিপাকে। চোরা গরু আসাতে দেশীয় গরু গুলি তেমন বেচা-কেনা হয় না। এছাড়া মায়ানমারের এই গরু চোয়াছে খুরা রোগ বহন করে নিয়ে আসছেন বলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা জানান।
সচেতন মহল মায়ানমারের এই গরু পাচার বন্ধে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ৩০ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টা থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি চাকঢালা,বিছামারা ও সদর এলাকা এবং গর্জনিয়া বাজার থেকে প্রায় ২ হাজারেরও অধিক মায়ানমারের গরু পাচারকারীরা সড়ক পথে ছোট-বড় পিকাপ,ট্রাক যোগে ও হেটে পাচার করে দেয় । এতে সরকার বঞ্চিত হয় লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।