মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
২ লক্ষ ৬৮ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় কলিম উল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহ নামক ২ রোহিঙ্গাকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে দন্ডিতদের ৫ লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। দন্ডিত ২ জন পিতা পুত্র।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার (৩ এপ্রিল) এ রায় ঘোষণা করেন। একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত কলিম উল্লাহ (৩৯) কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত জাহিদ হোসাইন ও ফাতেমা খাতুনের পুত্র এবং অপরজন দন্ডিত কলিম উল্লাহ’র পুত্র কেফায়েত উল্লাহ (১৯)। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীদ্বয় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ এবং দন্ডিত আসামীদ্বয়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট এম. এ বারী মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২১ সালের ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের কলিম উল্লাহ’র বসতঘরে র্যাব-১৫ এর একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে কলিম উল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহ’কে আটক হয়। পরে আটককৃতদের স্বীকারোক্তি মতে বসতঘরের মেঝের মাটি খুড়িয়া ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ইয়াবা টেবলেট এবং ২৮ হাজার ৫০ কিয়াট মিয়ানমারের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় র্যাব-১৫ এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আলাউদ্দিন বাদী হয়ে উখিয়া থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পিতা-পুত্র যথাক্রমে কলিম উল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার উখিয়া থানা মামলা নম্বর : ১৭/২০২১, জিআর মামলা নম্বর : ৫৮৮/২০২১ (উখিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৭৭৭/২০২২ ইংরেজি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) ধারার ১০(গ) সারণীতে একটি চার্জশীট এবং অবৈধভাবে মিয়ানমারের মুদ্রা রাখায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ধারায় পৃথক আরেকটি চার্জশীট আদালতে দাখিল করেন।
২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে চার্জ গঠন (অভিযোগ) করা হয়।
মামামলাটির ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য্য করা হয়। রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) ধারার ১০(গ) সারণীতে আসামী কলিম উল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহকে দোষী সাব্যস্থ করে প্রত্যককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে দন্ডিতদের ৫ লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
রায়ে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তাঁর পর্যবেক্ষনে বলেন, আসামীদের অপরাধ, অনুযায়ী এবং রাষ্ট্র পক্ষের উপস্থাপিত প্রমাণ মতে আসামীদের শাস্তি আরো বেশি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আসামীদ্বয় নিজেরা দোষ স্বীকার করে আদালতের অনুকম্পা চেয়েছেন। এছাড়া আসামী কলিম উল্লাহ অসুস্থ এবং কেফায়েত উল্লাহ’র বয়স কম। তাই আদালত আসামীদের অনুকম্পা দেখিয়ে এবং অসুস্থ ও বয়স কম বিবেচনায় আসামীদের লঘু শাস্তি হিসাবে উল্লেখিত সাজা প্রদান করেছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।