এম.এ আজিজ রাসেল:
কক্সবাজারে রাখাইন নববর্ষ পালনের বর্ণিল আয়োজন চলছে। রাখাইন সম্প্রদায় আগামী ১৭ এপ্রিল ১৩৮৪ মগীসনকে বিদায় জানিয়ে সানন্দে বরণ করবে ১৩৮৫ মগীসনকে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনরা বর্ষ বরণে প্রতিবছর সাংগ্রাই পোয়ে (জলকেলি) উৎসব ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় পালন করে থাকে। এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন শহরে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জলকেলি উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) শহরের বিভিন্ন রাখাইন পল্লী থেকে বের করা হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন রাখাইন পল্লী পদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় অগ্গমেধাস্থ মাহাসিংদোগ্রী বিহারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন নগদ টাকা, চাল, চিনি, দুধ, কলা, নারিকেল, মোমবাতি, সাবান দেশলাইসহ হরেক রকম পণ্য। বিহারের ধর্মীয় গুরু নানা ধর্মীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করেন। এছাড়া ১৫ ও ১৬ এপ্রিল রাখাইন পল্লীগুলোতে শিশুরা জলকেলিতে মেতে উঠবে। আর ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হবে মূল সাংগ্রাইং পোয়ে বা জলকেলি উৎসব। নববর্ষে রাখাইন বয়স্ক নারী—পুরুষরা উপবাসও করে থাকেন। এ সময় প্রাণী হত্যা, মিথ্যা বলাসহ কমপক্ষে ৮টি দুষ্কর্ম থেকে দূরে থাকতে হয়।

শহরের আছিমং পেশকার পাড়া, টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, বার্মিজ স্কুল এলাকা, চাউল বাজার, পূর্ব—পশ্চিম মাছ বাজার, ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় তৈরি করা হচ্ছে জলকেলির ২০টি নান্দিক প্যান্ডেল। আগামী ১৭ এপ্রিল দুপুর ২টায় আছিমং পেশকার পাড়ায় জলকেলি উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

রঙিন ফুল আর নানা কারুকার্যে্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্যান্ডেলের চারপাশ। সবার মাঝে এখন বর্ষ বরণের আমেজ। নতুন সাজে সাজছে কক্সবাজারের রাখাইন পল্লীর প্রতিটি বাড়ি।

কক্সবাজার শহর ছাড়াও মহেশখালী, টেকনাফ, সদর, হ্নীলা, চৌধুরী পাড়া, রামু, পানিরছড়া, চকরিয়ার মানিক পুরসহ রাখাইন অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সপ্তাহ জুড়ে নববর্ষ পালনে নানা অনুষ্ঠান পালিত হবে।