কক্সবাজারে সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ মুলধারা সংগঠনগুলোর কোনটিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এর মধ্যে যুবলীগের কমিটি কিছুদিন আগে বিলুপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া যুবমহিলা লীগের পূর্ণ্ঙ্গা কমিটি নেই। স্বেচ্ছাসেবক লীগ চলছে সম্মেলন বাস্তবায় কমিটি দিয়ে। এতে সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন, একটি সরকারি দলের মাদার সংগঠনসহ মুল ধারার সংগঠনগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকা বড়ই আশ্চর্য্যজনক বিষয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিহীন সংগঠন দিকে কিভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন মোকাবেলা যায়- তা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এই বিষয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী সদস্য বদরুল হাসান মিলকি। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগসহ জেলা ও উপজেলার সব অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ গঠন করতে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতা। এই চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা উদ্বেলিত হয়ে পড়েছেন।

নিচে তার চিঠিটি তুলে ধরা হলো:-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসসালামুয়ালাইকুম, কক্সবাজারের সমসাময়িক সংগঠনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার কাছে বিনয়ের সাথে অবগত করছি, আপনার প্রাণপ্রিয় সংগঠন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থান তুলে ধরলাম, আজকে থেকে ডিসেম্বরের ৭/১২/২০২২ তারিখ সুন্দর একটা সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আপনার নির্দেশনায় সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। এই সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অদ্যবতী সেই জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আপনার বরাবরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো সম্ভব হয় নাই। অথচ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডিসেম্বর ২৩ তারিখের সম্মেলনে আমি একজন সাধারণ কাউন্সিলর হিসেবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিল। সেই জাতীয় সম্মেলনে গঠনতন্ত্র আপনার নেতৃত্বে সংশোধনী আনা হল। জেলা উপজেলা সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়ার গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। সেটা উপস্থিত সারা বাংলাদেশ থেকে আগত ৭৩০০ জন কাউন্সিলর করতালির মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত করা হয়। এতে দলের সাধারণ কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়।

কিন্তু বাস্তবে আমরা জেলা/ উপজেলায় ৪৫ দিনের সেই গঠনতন্ত্রের বাধ্যবাধকতা থাকার পরও তাদের কোন সেদিকে কোন সদিচ্ছা নেই। কিছু কিছু জেলা উপজেলায় এক বছরও কমিটি করার তাদের কোন ইচ্ছা নেই। মাননীয় নেত্রী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অতি দ্রুত কক্সবাজার জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া প্রয়োজন।

আপনাকে আরো অবগত করতে চাই কক্সবাজার রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ ছাড়া কক্সবাজার জেলার প্রত্যেকটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সার্বিক সহযোগিতায় সাংগঠনিক টিম গঠন করে সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সেখানেও সাত-আট মাস অতিবাহিত হওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয় নাই। প্রিয় নেত্রী কক্সবাজার জেলা যুবলীগের দুইজনের কমিটি পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরে গত মাসে উক্ত জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

সেই হিসেবে জেলা যুবলীগের কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি নাই। উপজেলাতেও একই অবস্থা। এভাবে সংগঠন চললে আগামী সংসদ নির্বাচনে এটা একটা প্রভাব পড়তে পারে। কেন্দ্র থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য কিছু পদবী কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছে তার আলোকে তাদের কিছু কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে, তবে উপজেলাতে ছাত্রলী গ দুই ভাগে বিভক্ত কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই ।

মাননীয় নেত্রী
স্বেচ্ছাসেবক লীগ আগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে, পরে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে,সেই হিসাবে তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মাননীয় নেত্রী, জেলা যুব মহিলালীগ ঝাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দুইজনের কমিটির ঘোষণা করা হয়, তার মধ্যে সভাপতি কে সংগঠনবিরোধী কাজের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়। এখন একজন সাধারণ সম্পাদক নেতৃত্বে জেলা যুব মহিলা লীগের কার্যক্রম, উপজেলায় সংগঠনের করুণ অবস্থা।

মাননীয় নেত্রী,
আপনি আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক মূল সংগঠনের বাইরে সহযোগী সংগঠনেরও কোন উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকাতে দলের মাঝে অনেক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমরা যদি প্রত্যেকটা উপজেলায় দলের নেতাকর্মীদের কে মূল্যায়ন করতে না পারি, নেতা নির্বাচিত করতে না পারি তাহলে আমাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হব।

প্রিয় নেত্রী
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সহ সমস্ত সংগঠনের জেলা/ উপজেলা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এই কয়টা মাস যদি আমরা নিরলস ভাবে দলের জন্য, আপনার জন্য কষ্ট করি তাহলে অবশ্যই সংগঠনের হাজার হাজার কর্মীর নেতৃত্বে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সাফল্য অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হউক