বার্তা পরিবেশক:
প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৫৪ বছর পর প্রথমবারেরমতো আধুনিক দৃষ্টিনন্দন মাল্টিপারপাস বহুতল ভবন পেতে যাচ্ছে কক্সবাজার পৌরসভা। বুধবার সকালে পৌরসভার সামনে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন মেয়র মুজিবুর রহমান। মূলত: তিনিই নতুন এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে নিজের মেয়াদের মধ্যেই তা বাস্তবতায় রূপ দিতে চলেছেন।
ফলক উন্মোচনকালে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সারোয়ার সালাম, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের, সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা, প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবির, কাউন্সিলর এম.এ মনজুর, প্যানেল মেয়র-৩ শাহেনা আক্তার পাখি, কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশ, কাউন্সিলর আক্তার কামাল, কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ, কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদার, কাউন্সিলর জাহেদা আক্তার, নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার পরাক্রম চাকমা ও প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী শামীমা ফেরদৌস দীনাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও বর্তমান মেয়রের প্রচেষ্টায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাওয়া ১২ তলা বিশিষ্ট আধুনিক এ ভবন বাস্তবায়ন হলে পুরোপুরিই বদলে যাবে পর্যটন নগরীর চেহারা। ভবনের সবগুলো ফ্লোরে পৌরসভার নাগরিক সেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর থাকবে। ইতোমধ্যে বুয়েটের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা ভবনের নকসা তৈরীও শেষ হয়েছে।
নতুন পৌর ভবনটির নকসা তৈরী করেছে দেশের স্বনামধন্য আর্কিটেক প্রতিষ্ঠান ইনরেন আর্কিটেকস এন্ড জেডএইচএন এসোসিয়েটস।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষক স্থপতি এম এন জাহিদুল ইসলাম খান জানান, আধুনিক স্থাপত্য শৈলী সম্পন্ন চারপাশে সবুজে ভরা একটি গ্রীণ বিল্ডিং হবে কক্সবাজার পৌরসভার এই নতুন ভবন৷ যেখানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রকৃতিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে। বিশেষ করে আশপাশের পরিবেশ এবং প্রতিবেশকে সমুন্নত রেখে আলো ছায়ার খেলা সমৃদ্ধ এই পৌর ভবন টেকসইভাবে নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে আরবান ডেভেলপমেন্ট সিটি গভর্নেস প্রজেক্ট (ইউডিসিজিপি) প্রকল্পের আওতায় ভবনটি আলোর মুখ দেখতে সময় লাগবে আনুমানিক দেড় থেকে দুই বছর।
এদিকে নতুন পৌর ভবনসহ প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের সহযোগিতা এবং পরামর্শ চেয়ে নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন মেয়র মুজিব।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার পরাক্রম চাকমা জানান, একটি সিটি কর্পোরেশন ভবনে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকে তার সবগুলোই থাকবে নতুন এই ভবনে। কারণ সারাদেশের ৩৩৯টি পৌরসভার মধ্যে এটি প্রথম শ্রেণীর বিশেষ পৌরসভা। সেই আদলে আধুনিক এই পৌর ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন মেয়র মুজিবুর রহমান।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সারোয়ার সালাম জানান, জেলা সদরের এই পৌরসভা দীর্ঘদিনের পুরোনো হলেও ছোট খাটো কিছু কাজ ছাড়া এতো বছর তেমন কোন উন্নয়ন পায়নি এখানকার নাগরিকরা। ফলে গত কয়েক বছরে রাস্তাঘাটের আমূল পরিবর্তনের পর এবার আধুনিক পৌর ভবনটি নির্মাণ হলে সরকার প্রধানের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাবে পৌরবাসী।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে না চাইতেই অনেক কিছু দিয়েছেন, সে জন্য আমি তাঁর প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় আমি দীর্ঘ ১৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে জরাজীর্ণ রাস্তাঘাটগুলো টেকসই আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে এখন আধুনিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় রূপ দিয়েছি। যে সড়ক দিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং স্থানীয়রা নিখুঁতভাবে যাতায়াত করছে প্রতিনিয়ত। পৌরবাসীকে এমন সুন্দর অভূতপূর্ব উন্নয়ন দিতে পেরে আমি খুবই সন্তুষ্ট। সরকার প্রধানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবার আমি আধুনিক যে পৌর ভবনটি করতে যাচ্ছি সেটি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে ওই ভবন থেকে স্মার্ট নাগরিকরা স্মার্ট সেবা নিতে পারবে।”
প্রসঙ্গত: ১৮৬৯ সালে কক্সবাজার পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।