মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া
কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়ায় জমি দখলে নিতে প্রভাবশালী কর্তৃক সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় সংখ্যালঘু পরিবারের ৮নারী-পুরুষ আহত হয়েছে। আহদের কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ৫ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে দ্বীপের বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড়ের ছৈয়দ পাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর আহত সংখ্যালঘু পরিবারের একজন বাদী হয়ে কুতুবদিয়া থানায় এজাহার দিলেও সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে গড়িমসি করছে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন।
কুতুবদিয়া থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫জুলাই সকাল ১০টার দিকে উপজেলা সদরের বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড়ের ছৈয়দ পাড়া গ্রামে শিবু দাশ (২৪) এর পরিবারে সদস্যরা তাদের জমিতে চাষাবাদের কাজ করছিল। এসময় জমিগুলো নিজেদের দাবি করে অতর্কিত অবস্থায় লাঠিসোঁটা নিয়ে শিবু দাশের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায় একই এলাকার মিয়ার পাড়া পাড়া গ্রামের রুহুল কাদের বাদশার নেতৃত্বে একদল লোক। হামলাকারীদের এলোপাথাড়ি মারধরে সংখ্যালঘু পরিবারের ৮নারী-পুরুষ আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন, নকুল দাশের দুই পুত্র বৃদ্ধ কাশ কুমার প্রকাশ চাঁদ কুমার দাশ ও লেডু প্রকাশ জয়সন দাশ, চাঁদ কুমারের স্ত্রী অঞ্জলী রানী দাশ, পুত্র শিবু দাশ, কন্যা সুমী দাশ, সুমী দাশের স্বামী সুমন দাশ, জয়সন দাশের স্ত্রী কাজলী দাশ, লাল মোহন দাশের পুত্র সুশীল দাশ। ঘটনার কিছুক্ষণ পর আহতদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। আহতদের মধ্যে শিবু দাশ, অঞ্জলী রাণী দাশ, কাশ কুমার দাশ, কাজলী দাশ ও সুমন দাশের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই দিনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেকে) রেফার করা হয়।
ঘটনার পর আহত শিবু দাশ বাদী হয়ে হামলাকারী কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ মিয়ার পাড়ার বাসিন্দা আবদুস সালাম (৪২), রুহুল কাদের বাদশা (৫৫), ও মো: খোকন (৫০) সর্ব পিতা- মোক্তার আহমদ, সালাউদ্দিন কাদের জুয়েল (৩২), পিতা রুহুল কাদের বাদশা, মাহমুজ (৪৬), পিতা- মৃত জালাল আহমদ, হাসান শরীফ (৪৮), পিতা শাহ্ আলম, মঈন উদ্দিন কাদের সোহেল (২২) পিতা রুহুল কাদের বাদশা, পারভীন আক্তার (২৯) স্বামী আবদু সালামের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
আহত শিবু দাশ বলেন, আমরা গরীব অসহায় ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় আমাদের ওপর রুহুল কাদের বাদশা গং বেপরোয়াভাবে হামলা চালিয়েছে। আমি এ হামলার বিচার চাই। কিন্তু কুতুবদিয়া থানা পুলিশ এখনো (৭জুলাই বিকাল পর্যন্ত) আমার দায়েরকৃত এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি।
শিবু দাশ আরো বলেন, আমার পিতার নামীয় কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ মৌজার বিএস ১৯৮৪ নং খতিয়ানে কিছু জমি রয়েছে। আমার পিতা ১০০০ নং দানপত্রের দলিল মূলে আমার মাতা অঞ্জলী রানী দাশকে সে জমি দান করে দেন। উক্ত খতিয়ানের জায়গা রুহুল কাদের বাদশা গং লোভের বশবর্তী হয়ে জবর দখল করতে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।
জায়গার প্রকৃত মালিক অঞ্জলী রানী দাশ বলেন, রুহুল কাদের বাদশা গংরা প্রভাবশালী। তারা দীর্ঘ দিন যাবৎ আমাদেরকে ভয়ভীতিসহ জমি দখলের দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতার ঘটনার দিন সকালে আমার স্বামী ও ছেলেরা আমার জমিতে চাষাবাদেও কাজ করার সময় রুহুল কাদের বাদশার নেতৃত্বে একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার পরিবারের লোকজনের উপর বেপরোয়া হামলা চালিয়ে ৮ জনকে আহত করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুতুবদিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, আহতদের পরিবার গতকাল ৬ জুলাই থানায় এজাহার জমা দিয়েছে। পুলিশ এখন সেটি তদন্ত করে দেখছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ মামলা নিচ্ছেনা এ কথাটি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেছেন।
আরো খবর
ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে: নবনির্বাচিত মেয়র মাহবু
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২ গ্রুপের ‘গোলাগুলি’তে ৫ রোহিঙ্গা নিহত
বৌদ্ধ ভিক্ষু ধর্মজ্যোতি‘র প্রতি জেলা বিএনপি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের শ্রদ্ধা নিবেদন
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।