বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গি‌য়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে দোষীদের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করে উল্টো দোষীদের পক্ষে নেয়ার অভিযোগে থান‌চি উপজেলা পরিষদের সকল ধরণের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেলে থান‌চি প্রেসক্লাবের জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংবাদকর্মীরা জানান, থান‌চির উপজেলার প্রবীন সাংবাদিক ও থানচি প্রেসক্লাবে সভাপতি অনুপম মারমা উপ‌জেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি আপন ছোট ভাই থোয়াইপ্রুঅং মারমা পাহাড় কাটছে এমন খবর পে‌য়ে মঙ্গলবার (২৫জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় থানচি উপজেলা সদরে প্রশাসনের নাগের ডগায় মরিয়ন পাড়ায় যায়। সেখা‌নে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় তার মোটরসাইকেল অচল করে দেয় এবং গাড়িতে থাকার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গায়েব করেন। পরবর্তী‌তে একই দিনের ঘটনার মীমাংসা বা দোষীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে থান‌চি উপ‌জেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লামং মারমা থানচি থানায় ওসি রুমে প্রেস ক্লা‌বের সভাপ‌তি‌কে ডে‌কে নি‌য়ে উল্টো ছোট ভাইয়ের পক্ষ নি‌য়ে অকথ্য ভাষায় গালাগা‌লি ক‌রেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন দুনীতি কর্মকান্ড সংবাদ পরিবেশ করবে না এমন মোজলেকা ও চেয়ারম্যানের পাঁয়ে সালাম দিয়ে মাফ চাইলে ক্ষমা করবে। এছাড়াও সাংবাদিকদের টাকা পয়সা না থাকলে চেয়ারম্যান কাজ থেকে চেয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। রাত ৯ টা থেকে দ্রুত আলোচনায় থানায় প্রত্যক্ষদর্শী উপস্থিত উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা ও ওসি ইমদাদুল হক গভীর ভাবে বুঝানোর পর চেয়ারম্যান ও তার দলবল মাথা ঠান্ডা হয়ে হাতে হাত মিলিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় থান‌চি উপজেলা কর্মরত সকল সংবাদকর্মীরা নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত থান‌চি উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সভার সেমিনার সকল সংবাদ বর্জনসহ পরবর্তী‌তে বৃহত্তর কর্মসূচীর ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় উপজেলা প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রেম্বো ত্রিপুরা, অর্থ সম্পাদক হিমংপ্রু মারমা, সদস্য চহ্লামং মারমা, থুইমংপ্রু মারমা, মর্টিং ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন
অনুপম মারমা বলেন, আমি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সংবাদ কর্মী ছাড়াও জাতীর পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়ার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আদর্শের পতাকা তলে অনুসারী ও কর্মী ছিলেন। তিনি জানান, ১৯৮৬-৮৯ পর্যন্ত রাউজান কলেজের ছাত্র লীগের সদস্য ছিলেন, কলেজের ছাত্র লীগের আয়োজনের ১৯৮৭ সালে বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বদেশ প্রত্যবর্তন ও বিশাল সংর্বধনায় স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সোনার তরী উপহার দিয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে বান্দরবান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম মাহাবুব আলম সু- পরামর্শে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন থানচি উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হয়ে প্রথম প্রতিষ্ঠার করেন, ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, ২০০৩ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এলাকার পরিবেশের কারনের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের ব্যালটের মাধ্যমের কমিটি গঠন করা সম্ভব হয় নি। কিন্তু অনুপম মারমা সাধারন সম্পাদক দায়িত্ব পালন কালে ২০১১ সালে ১৩ ডিসেম্বার ব্যালটে মাধ্যমে গনতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্র অনুসারে অংশগ্রহন মূলক অবাধ সুস্থভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন করতে স্বক্ষম হয়। এছাড়াও ২০১১ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৫ সালে মূলধারা সাংবাদিকতা এক পেশায় চলে আসছেন তিনি।
অনুপম মারমা বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদককে বর্তমান সভাপতি থানা ডেকে নিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সম্মূখে অকথ্যা ভাষা গালিগালাজ করে পা দরে মাফ চাওয়া অপমান করার হলো। সেটি জাতীর পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে অপমান করার শ্রেয় বলে মনে করেন তিনি।