আজিজ রাসেল , সিবিএন:
কক্সবাজারের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমার ফানুসের আলোয় বর্ণিল হয়ে উঠেছে আকাশ। সাম্প্রদায়িক অন্ধকার দূর করার প্রত্যয় নিয়ে আকাশে উড়ানো হয়েছে শত শত রং-বেরঙের ফানুস।
শনিবার থেকে ৩দিন ব্যাপী এ উৎসব শুরু হয়েছে উৎসবের দ্বিতীয় দিন রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার জেলাব্যাপী একযোগে উড়ানো হয় ফানুস।
কক্সবাজার কেন্দ্রীয় মাহাসাংদোগ্রী বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের নারী—পুরুষ নতুন পোশাক ও উন্নতমানের খাবার নিয়ে বিহারে আসেন। সেখানে সুখ—শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় প্রার্থনা করেন সবাই। এবার শহরের অ¹মেধা বৌদ্ধ বিহার, পিটাকেট, মোহাজের পাড়া বৌদ্ধ বিহার, জাদিরাং বিহার ও রাখাইন সামাজিক এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলো নজরকাড়া প্রায় ৫০টি নান্দনিক প্যান্ডেল তৈরি করেছে। প্যান্ডেলগুলোর মূল আকর্ষণ বুদ্ধ। জমকালোভাবে সাজানো হয়েছে এসব প্যান্ডেল। বিহারগুলোও সেজেছে নব রূপে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় আলোকিত করা সর্বত্র। প্রবারণা ঘিরে বৌদ্ধ পল্লীর ঘরে ঘরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের অজ্ঞ মেধা ক্যাং পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। এসময় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক এসময় বৌদ্ধদের ফানুস তৈরি এবং উত্তোলনের দৃশ্য উপভোগ করেন।
রাখাইনদের নেতা কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যা থিং অং জানান, ‘সন্ধ্যার পর থেকে তারা প্রায় একশ ফানুস উত্তোলন করেন।’
সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন বলেন, ‘প্রবারণার মূল প্রতিপাদ্য আত্মশুদ্ধি, শুভ, সত্য ও সুন্দরকে বরণ করে অসত্য ও অসুন্দরকে বর্জন করা। আমি কামনা করি মানুষের অন্তর থেকে সব মলিনতা দূর করে অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী, প্রেম ও দয়া জাগ্রত হোক।’
কক্সবাজারের রামু, টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়ায়ও ফানুস উত্তোলন করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর সোমবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কল্প জাহাজ ভাসার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, সিদ্ধার্থ যখন বুদ্ধিসত্ত রূপে শ্রাবন্তী নগর থেকে গৃহত্যাগ করেন। তখন অনুমাদ্ধর্শী নদী তীরে অবস্থান কালে অধিষ্ঠান করে নিজ চুলকে কর্তন করে উপরে দিকে নিক্ষেপ করেন। সে চুল গুচ্ছ মহাতাবতিংস স্বর্গের জাদি হিসেবে স্থির আছে। তাই চুলামনি নামে প্যাগোডা উদ্দেশ্যেই পূঁজা এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে ফানুস উড়ানো হয় বলে জানা গেছে। তথাগত ভগবান বুদ্ধের আড়াই হাজার বছর পূর্বে সময়ের তাবতিংসা স্বর্গের তিন মাস বর্ষাবাস করে কাত্তির্কী পূর্ণিমাকে ঘিরে মানবকুলের মহাপৃথিবীতে অবতরণ করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।