মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কেন্দ্র ঘোষিত চলমান ৩ দিনের অবরোধের সমর্থনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কক্সবাজার জেলা বার ইউনিটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মুখে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কক্সবাজার জেলা বার ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ছৈয়দ আলম, আইনজীবী ফোরাম কক্সবাজার জেলা বার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, আইনজীবী ফোরাম কক্সবাজার জেলা বার ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল মন্নান, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি’র মত একটি জনপ্রিয় দলকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করার জন্য তথাকথিত সহিংসতা ও হত্যাকান্ডের মত জঘন্য অপরাধের সাথে বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা ও তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দকে আসামি করা হয়েছে।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের যৌথ হামলায় বিএনপির মহাসমাবেশ পন্ড করার ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার, রিমান্ডে প্রেরণ, বিএনপি অফিসকে তালাবদ্ধ করে রাখা, এ সবই জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি-কে নেতৃত্বশূন্য করার নীল নকশার অংশ। যাতে বিএনপি এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান ‘এক দফার’ আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। কিন্তু যেকোন মূল্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বক্তারা বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটকে কথিত ভাংচুরের ঘটনাটিও এই নীল নকশার অংশ। যেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বিচার বিভাগ থেকে কোনো ন্যায় বিচার না পান। বক্তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তা না হলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে কথিত ভাংচুরের ঘটনায় আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ দায়িত্বশীল পাঁচজন সিনিয়র আইনজীবী সদস্যকে কেন আসামি করা হবে? বক্তারা এই নীল নকশা প্রণয়নকারীদের প্রতি ধিক্কার জানান।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা তথাকথিত রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বসহ সারাদেশের বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও হয়রানীমূলক’ মামলা দায়ের এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আটক নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তি ও দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, সারদেশের ১৮ জন আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রযেছে। কক্সবাজার জেলাতেও ৫ টি মিথ্যা মামলায় বিএনপি ও অংগ সংগঠনের শত শত নেতা-কর্মীদের আসামী করে হয়রানি করা হচ্ছে।
বিএনপি নেতাদের বাসায় না পেয়ে তাদের স্বজনদের ধরে আনা হয়েছে। তথাকথিত ক্রাইম জোন ঘোষণা করে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় অফিস বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যাতে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা না করতে পারে।
বক্তারা বলেন, দায়েরকৃত মামলাগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পুলিশ কন্সটেবল মো: আমিরুল হক নিহত হওয়ার ঘটনায় পল্টন থানায় দায়েরকৃত মামলা থেকেই এর প্রমাণ মিলবে। এই মামলায় বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, অঙ্গ সংগঠনসমূহের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ দেশের জেলা ও থানা পর্যায়ের ১৬৪ জন নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এটা অবিশ্বাস্য যে, পুলিশ এই বিপুল সংখ্যক নেতাদের নাম, ঠিকানা, বাবা-মার নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেছে। পূর্ব প্রস্তুতি ও পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া এটা কখনোই সম্ভব না।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আইনজীবীদের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করা একটি মিছিল কক্সবাজার আদালত এলাকা প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশ ও মিছিলে শতাধিক আইনজীবী অংশ নেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।