বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী নতুন মহাল রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মিজানুর রহমান সন্ত্রাসী হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন। ২৩ নভেম্বর বেলা ১১টায় সুপার কার্যালয়ে নানান অনিয়মে অভিযুক্ত সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সহ-সুপার ফজলুল করিমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সুপার মিজানকে উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাত ও বেদম মারধর করে আহত করে। এসময় হামলাকারীরা সুপার মিজানকে গলাটিপে হত্যা অপচেষ্টা চালায়। সুপার কার্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামরা খুলে ফেলে হামলাকারীরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায়। পরে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মিজানকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আহত মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মিজান চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটের মৃত মাহবুবুর রহমানের পুত্র।
এদিকে প্রাপ্ত তথ্য ও কক্সবাজার মডেল থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০০০ সালে স্থাপিত মাদ্রাসাটি সুপার মিজানের নেতৃত্বে ২০১৯ সালের ১ জুলাই এমপিওভূক্ত হয়। মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীদের ফলাফলও চমৎকার। বর্তমানে সম্ভবনাময়ী মাদ্রাসাটিতে প্রায় ছয়’শ শিক্ষার্থী অধ্যায়ণরত।
কিন্তু ভাল প্রতিষ্ঠানটির ধ্বংসের মূলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন- মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি নামধারী স্থানীয় মৃত ফয়েজুর রহমানের পুত্র রফিকুল ইসলাম। আহত মাদ্রাসা সুপার জানান, বিগত ৩১ মার্চ ২০২৩ এ অনুষ্ঠিত মাদ্রাসার তিনটি নিয়োগ পদে পরীক্ষা হয়। এতে পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ এক প্রার্থীর নিয়োগ পত্রে অনৈতিক স্বাক্ষর না করায় সুপারের উপর ক্ষিপ্ত হন নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত সভাপতি রফিক। এরপর দু-তিন দফা সুপারকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালায় স্বশিক্ষিত গাদ্দার রফিক। শুধু তাই নয়-বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্য করে অন্তত ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যা মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে তদন্তে সত্যতা মিলেছে। সর্বশেষ সভাপতির নানান অনিয়ম আমলে নিয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এক অফিস আদেশে গত ৮ নভেম্বর মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটি ভেঙ্গে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিক, সহ সুপার ফজলুল করিম, বেলাল উদ্দিন, আজাদ, আবু মুছা, করিম উল্লাহ, সাজ্জাদের নেতৃত্বে একদল লোক প্রশাসনের যাবতীয় নির্দেশ অমান্য করে সুপার মাওলানা মিজানের উপর হামলে পড়ে।
এদিকে মাদ্রাসা সুপার মিজানের উপর হামলার বিষয় জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, মাদ্রাসার সাবেক সভাপতির নেতৃত্বে একজন সম্মানিত সুপারের উপর অন্যায়ভাবে হামলা দুঃখজনক। ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, বিষয়টি শুনেছি। এটি লজ্জাজনক। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে বেশক’বার ফোন করলেও তিনি কেটে দেয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।