প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় সম্পন্ন হলো রামু লম্বরীপাড়ার সর্বপ্রথম নূরানী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল কুরআন নুরানী একাডেমীর নবপ্রতিষ্ঠিত হিফজখানার সর্বপ্রথম হিফজুল কুরআনের সবক প্রদান, নূুরানীর কৃতি শিক্ষার্থীদের পূরস্কার বিতরণ ও তৃতীয় শ্রেণির সনদ পরীক্ষা উপলক্ষে দু’আ মাহফিল ও অভিভাবক সমাবেশ। ২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে ৯ টায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, রামু জোয়ারিয়ানালা এমদাদুল মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা হাফেজ আব্দুল হক। তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত এ হিফজখানার ৫ জন শিক্ষার্থীকে হিফজুল কুরআনের প্রথম সবক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কুরআনুল কারীম আল্লাহ তা’আলার কালাম, সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব। হিফজখানাসমূহে অবিরাম তিলাওয়াতে কুরআনের ফলশ্রতিতেই এখনো সমাজে রহমত, বরকত জারি রয়েছে। তাই হিফজুল কুরআনের এ প্রতিষ্ঠান এলাকাবাসীর জন্য আল্লাহর তা’আলার বড়ই নিয়ামত। এ নিয়ামতের যথাযথ শুকরিয়া আদায় করতে হবে। তিনি আরও বলেন, হাফেজ সাহেবানরা আল্লাহপাকের বিশেষ রহমত এবং বিরল প্রতিভার অধিকারী। তাই তাঁরা আল্লাহপাকের ৩০ পারা কুরআনের আমানত বক্ষে ধারণ করার তাওফিক লাভ করেন। হিফজখানাগুলো এমনই হাফেজে কুরআন তৈরির অবারিত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। কুরআন-সুন্নাহর এ শিক্ষাধারার একনিষ্ঠ সহযোগী হওয়া আমাদের ঈমানী কর্তব্য।
সম্মানিত অভিভাবকদৃন্দসহ দ্বীন অনুরাগী ব্যক্তিবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, দারুল কুরআন নূরানী একাডেমী, হিফজখানা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর।
এলাকার প্রবীণ আলেমদ্বীন মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পবিত্র এ অায়োজনে প্রধান অালোচক ছিলেন, কক্সবাজার বদরমোকাম জামে মসজিদের খতীব মাওলানা কারী আব্দুল খালেক নিজামী। তিনি বলেন, কুরআনুল কারীমের সহীহ তিলাওয়াত ও ইসলামের বুনিয়াদী তা’লীম দেয়ার লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী ও বিশেষায়িত শিক্ষা পদ্ধতি ‘নূরানী শিক্ষাধারা’। সেই সাথে এ শিক্ষাধারায় রয়েছে প্রয়োজনীয় সাধারণ শিক্ষাদানের ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা। তাই এ পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের শহর, নহর, গঞ্জ -গ্রামে ব্যাপক সমাদৃতি লাভ করেছে।
অতিথি শিক্ষক মুহাম্মদ অলিউল্লাহ আরজুর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজারকুল মাছুমিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসার রেক্টর মাওলানা হাবিবুল হক সিকদার, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মাওলানা জুবাইরুল হক আনছারী, খরুলিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মাওলানা মুহাম্মদ হাসান, লম্বরীপাড়া সকরারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম. মিজানুর রহমান, রামু বাইপাস রশিদিয়া তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ সোলাইমান, মধ্য মেরংলোয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাফেজ রহিম উদ্দিন, সমাজহিতৈষী জসিম উদ্দিন, শুভানুধ্যায়ী সাইফুল ইসলাম, আজিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এলাকার মুরুব্বী হাজী সিরাজ মিয়া, হাজী মকবুল হোসাইন, আবু তাহের, ছাব্বির আহমদ, সাহাব মিয়া, অভিভাবক শামসুল আলম, মুজিবুর রহমান, মামুনুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, ওসমান গণি, মুহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক, মুজিবুল হক , নুরুল আমিন, সাইফুল ইসলাম, সেলিম উল্লাহ, মুজিবুল হক, আলী আহমদ, অলি উল্লাহ, বশির আহমদ, হারুনুর রশিদ, মুহাম্মদ নবী হোসাইন ( এ কে খান), শিক্ষা পরিচালক মাওলানা দিদারুল আলম, হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ এনামুল হক, নূরানী শিক্ষক মাওলানা হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মাওলানা আইয়ুব, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা আব্দুল্লাহ হোসাইনী প্রমুখ।
অনন্য সুন্দর এ আয়োজনে প্রতিষ্ঠানের চলতি শিক্ষাবর্ষের কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। সেই সাথে তৃতীয় শ্রেণির সনদ পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।
অতিথি ও অভিভাবকবৃন্দ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের কন্ঠে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, হাদীস শরীফ, জরুরী দু’আ-মাসায়েল ও ইংরেজি কথোপকথন শুনে এবং আরবী, বাংলা, ইংরেজীর চমৎকার হস্তলিপিসহ লেখা-পড়ার মানসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখে অভিভূত হন।

উল্লেখ্য, এ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পূর্ণ করে ষষ্ঠ বছরে পদার্পণ করেছে আলহামদুলিল্লাহ। এসময়কালে প্রতিষ্ঠানটি বৃহত্তর এলাকার কোমলমতি শিশুদের মাঝে সুশিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার মধ্যদিয়ে আলোকিত শিক্ষাঙ্গন হিসেবে কৃতিত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ইতোমধ্যে গত রমযানুল মোবারক থেকে আল্লাহর রহমতে এ প্রতিষ্ঠানে হিফজখানাও চালু করা হয়েছে। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যত্রম পরিচালনায় ধারাবাহিকতায় আগামী শিক্ষাবর্ষে ৫ম শ্রেণিতে উন্নীত হতে চলেছে। এতিম-মিসকিন শিক্ষার্থীদেরকেও যথাসাধ্য আনুকূল্য দিচ্ছে এ দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র। দ্বীনি শিক্ষার বিপ্লব ছড়িয়ে দেয়ার অভিপ্রায়ে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা ইসলাম অনুরাগীদের ঈমানী কর্তব্য। আল্লাহর দরবারে বিশেষ মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।