মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি ইতিমধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে মোট ৯২৫ জন আইনজীবী ভোটার হয়েছেন। খসড়া ভোটার তালিকায় ৭ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত আপত্তি দেওয়া যাবে। চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় এ সংখ্যা কমবেশি হতে পারে। গঠনতন্ত্র অনুসারে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আইনজীবীদের সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান ও নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছরই প্রথমবারের মতো সমিতির ম্যাগাজিন “আইনকন্ঠ” একইদিন প্রকাশিত হবে।
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন ও চকরিয়া উপজেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে পৃথক দু’টি ভোট কেন্দ্রে একই সাথে ২৪ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন করা হবে। এর মধ্যে চকরিয়া ও কুতুবদিয়া আদালতে কর্মরত আইনজীবীদের নিয়ে প্রকাশিত পৃথক একটি ভোটার তালিকার ভোট গ্রহন করা হবে চকরিয়া উপজেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে। অপর একটি ভোটার তালিকার ভোট গ্রহন করা হবে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির মূল ভবনে।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য সমিতির বিশেষ সাধারণ সভা করে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকের-কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফেরদাউস-কে সহকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শফিউল হক, অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ-৪, অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমদ, অ্যাডভোকেট নুর আহমদ-২, অ্যাডভোকেট আবু ছিদ্দিক এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ’কে কমিশনার করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী ৮ ফেব্রুয়ারী নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তফশিলে ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার ভোট গ্রহনের দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট থাকবে।
এদিকে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় জেলা আইনঙ্গনে নির্বাচনী আলোচনা বেশ জমে উঠছে। কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির দীর্ঘদিনের নির্বাচনী রেওয়াজ অনুযায়ী আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি সহ সরকার সমর্থিত রাজনৈতিক দল গুলোর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী পরিষদ সমর্থিত, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত একটি প্যানেল এবং বিএনপি, জামায়াত ইসলাম, এবি পার্টি সহ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী সমমনা আইনজীবীদের পৃথক আর একটি প্যানেল নির্বাচনে নিয়মিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে।
এবার আওয়ামী ঘরনার সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মনোনীত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আ.জ.ম মাঈন উদ্দিন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবালুর রশিদ আমিন সোহেল এর নাম শোনা যাচ্ছে। একই প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ, অ্যাডভোকেট হোসেন রাহাত ফিরোজ, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট একরামুলর নাম শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী, ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী প্যানেলে সভাপতি পদে ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছৈয়দ আলম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমির হোসাইন, সমিতির বর্তমান সভাপতি ও আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম-৪ এর মধ্য থেকে যেকোন একজন সভাপতি প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আকতার উদ্দিন হেলালী, অ্যাডভোকেট অ্যাডভোকেট আবদুল কাইয়ুম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাওহিদুল আনোয়ার, অ্যাডভোকেট আবদুল মন্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক খান কায়সার এর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি জানা যাবে উভয় প্যানেল থেকে শেষপর্যন্ত কারা কারা প্রার্থী হচ্ছেন।
এদিকে, আওয়ামীপন্থী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ তাদের প্যানেল নির্ধারণের জন্য আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সভা আহবান করবে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, বিএনপি পন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের শীর্ষ আইনজীবীরা তাদের চুড়ান্ত প্যানেল নির্ধারণ করতে শীঘ্রই যৌথ সভা আহবান করবেন বলে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী কমিটির মোট ১৭টি পদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত পন্থী প্যানেল সভাপতি, ২ জন সহ সভাপতি, সহ সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) সহ ১৩ টি পদে এবং আওয়ামীপন্থী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সাধারণ সম্পাদক, সহ সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) সহ মাত্র ৪ টি পদে জয়লাভ করেছিল।