আবদুল মালেক সিকদা,র রামু:

রামুতে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠা সেই শিক্ষকের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে করেছে রামু সরকারি কলেজের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

যৌন হয়রানির অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইন রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক।

রবিবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা যৌন নির্যাতনের ওই ঘটনার বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। তারা বলেন, একজন শিক্ষক হয়ে যৌন হয়রানির মত এমন একটি ঘৃণ্য কাজ করেছেন, তার কাছে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এমন শিক্ষককে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখা হলে শিক্ষার্থীরা কলেজ ছাড়তে বাধ্য হবে।

এছাড়াও অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি,অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। তারা এ দুই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারণ দাবি করে।

রামু কলেজের আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আকতার জাহান কাকলি বলেন, যৌন নির্যাতনের বিষয়টি সকলের জন্য খুবই দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকতুল্য। একজন শিক্ষক যদি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেন তাহলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করবে? তিনি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানা যায়, ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়েন রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সহপাঠীরা ওই শিক্ষককে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার কবিতা চত্বর সৈকতের ঝাউবাগান থেকে ১৫-২০ শিক্ষার্থী শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইনকে ধরে উত্তমমধ্যম দিয়ে কক্সবাজার আদালতপাড়ায় নিয়ে আসে। পরে সেখানে আইনজীবীর সামনে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান তিনি।

উল্লেখ্য যে, প্রশংসাপত্র বিতরণ, ভর্তি বাতিল, নির্বাচনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জরিমানাসহ এ রকম কয়েকটি খাতে বিনা রসিদে টাকা আদায় এবং অসংখ্য ভুয়া প্রকল্প বানিয়ে কলেজ ফান্ডের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে। শুধু আর্থিক অনিয়ম নয়, কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নাম ধরে ডাকা, অধ্যক্ষের সামনে দাঁড়িয়েই কথা বলা, শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া কলেজটি সরকারিকরণের পাঁচ বছর হলেও এখনো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেসরকারি নিয়মে বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করে আসছিলেন। যে কারণে চরম অসন্তোষ ছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। এসব বিষয়ে রামু সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ‘১৫ আগস্ট/ জাতীয় শোক দিবস ২০২৩’ শীর্ষক অনুষ্ঠান ব্যয় থেকে দুর্নীতির দেড় লাখ টাকা ফেরত দেন অধ্যক্ষ মুজিব।

মানববন্ধনে রামু কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।