অনলাইন ডেস্ক:
সোমালিয়ার জলদস্যুদের দখলে থাকা পণ্যবাহী জাহাজসহ ১৭ নাবিককে উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র। খবর আল জাজিরা।
শনিবার (১৬ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টু্ইটার) এক পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, ইউরোপের দেশ মাল্টার পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েনে থাকা ৩৫ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। আর জাহাজটিতে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদক রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়েছে।
গত বছরের শেষের দিকে এমভি রুয়েন ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) জাহাজটির গতিরোধ করে জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নৌবাহিনী। এসময় জাহাজে থাকা জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ ও আটককৃত বেসামরিক নাগরিকদের ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতীয় নৌবাহিনী এই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং নাবিকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌবাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলবর্তী ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশের পতাকাবাহী যে কার্গো জাহাজ ছিনতাই করা হয়েছে, তার জন্য এই এমভি রুয়েনকে জলদস্যুরা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারে।
ভারত মহাসাগরে কয়েক দশক ধরে বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এ কারণে এ জলপথ ব্যবহার করে পরিচালিত পণ্য পরিবহণ ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। তবে জলদস্যুদের কাছে বিষয়টি যতটা না ছিনতাই, তার চেয়ে বড় ধরনের আয়ের উৎস হিসেবে বিষয়টিকে দেখছে তারা। বিভিন্ন সময় দস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিকেরা এমনটাই জানিয়েছেন।
এদিকে, ভারতীয় ও ইউরোপিয়ান নৌবাহিনীর তৎপরতায় স্থির হতে পারছে না এমভি আব্দুল্লাহ ছিনতাইকারী জলদস্যুরা। নিজেদের এলাকায় অবস্থান করলেও নিরাপত্তা শঙ্কায় বারবার স্থান পরিবর্তন করছে তারা। সাবেক মেরিনাররা বলছেন, পুরোপুরি স্বস্তি না ফেরা পর্যন্ত মুক্তিপণের জন্য যোগাযোগ করবে না দস্যুরা। ভারত মহাসাগরে ছিনতাইয়ের পর এমভি আব্দুল্লাহকে নিয়ে শুক্রবার (১৫ মার্চ) পর্যন্ত দু’বার স্থান পরিবর্তন করেছে জলদস্যুরা। সবশেষ সেটি রাখা হয়েছে সোমালীয় উপকূলে তীর থেকে ৫ নটিক্যাল মাইল দূরে।
আব্দুল্লাহকে উপকূলে নেয়ার পথে ২৩ নাবিককে উদ্ধারে কয়েক দফা তৎপরতা চালায় ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নৌবাহিনী। তবে নাবিকদের জীবনের ঝুঁকি থাকায় পিছু হটে নৌসদস্যরা। কিন্তু এখনো নজরদারিতে থাকলেও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনো দেশের জলসীমার ১২ নটিক্যাল মাইলের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ নেই। তাই অনেকটা জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণেই আছে জাহাজটি।