মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

৩১ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নিশাত সুলতানা এ রায় প্রদান করেন। একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফরিদ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

দন্ডিত আসামী হলো-কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রঙ্গীখালী এলাকার জাহেদ হোছন ও নয়না খাতুনের পুত্র মোঃ হেলাল উদ্দিন (৪৩)। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আহমদ কবির এবং আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোঃ শফিউল্লাহ মঞ্জুর মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে র‍্যাব-১৫ এর একটি টিম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়ার ঘুমতলী কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উপর থাকা একটি কভার্ডভ্যান (নম্বর : ঢাকা মেট্টো :২০-৬২২০) থেকে ড্রাইভার মোঃ হেলাল উদ্দিনকে আটক করে। পরে কভার্ডভ্যানটি তল্লাশি করে ড্রাইভার সীটের পেছনের সীটের নীচ থেকে ৩১ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় র‍্যাব-১৫ এর ইন্সপেক্টর রফিক আহমদ মজুমদার বাদী হয়ে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে আসামী করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৫, তারিখ : ০১/১২/২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১০৬৮/২০২১ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৩৫৮/২০২৩ ইংরেজি।

বিচার ও রায় :

২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কাজ শুরু হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের জন্য রোববার দিন ধার্য্য করা হয়। ধার্য্য দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নিশাত সুলতানা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০ (গ) ধারায় আসামী মোঃ হেলাল উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা মূলে আসামী মোঃ হেলাল উদ্দিনকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বেঞ্চ সহকারী ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করার মাত্র এক বছর ২ মাস ২২ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

এ মামলার রায় সম্পর্কে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনিযুক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোঃ রেজাউর রহমান রেজা বলেন, দায়রা জজ আদালত এবং এ আদালতের আওতাধীন সকল আদালতের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তার ইতিবাচক প্রতিফলন বিভিন্ন আদালতে ইতিমধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে। রোববার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে রায় ঘোষণাকৃত মামলাটি চার্জ (অভিযোগ) গঠন করার মাত্র এক বছর ২ মাস ২২ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা নিঃসন্দেহে একটি গতিশীল বিচার ব্যবস্থার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বহন করে।