বাঁকখালী নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপের কারণে নদী দূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদেরও বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে একযোগে কাজ করতে হবে বলে জানান কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রোমেনা আক্তার।

তিনি বলেন, এই শহরটি দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানকার পরিবেশ প্রতিবেশ নিয়ে সকলের সচেতন হওয়া দরকার। বাঁকখালী নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপের কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমরা নদী দূষণ করে আসছি। স্থানীয় বসবাসকারী মানুষদের দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছি। নদী দূষণ রোধে এই আলোচনা সভা সমস্যার সমাধান ও দূষণ-দখলের কবল থেকে নদীকে বাঁচাতে সুন্দর উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে তরুণরা। তাদের যেকোনো সুন্দর উদ্যোগে সর্বসাধারণের উচিত পাশে থেকে সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করা।

নদী দূষণ রোধ করি, সুপেয় পানি নিশ্চিত করি এই প্রতিপাদ্য বিষয়ে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে গোলটেবিল বৈঠক ও অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন ২০২৪ইং) বিকেল ৩টায় কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

জলবায়ু ও পরিবেশ ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই ক্যান কক্সবাজারের আয়োজনে আলোচনা সভার সার্বিক সহযোগিতা করেন পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (প্রাণ), অ্যাকশন এইড ও টিম কক্সবাজার।

উক্ত আলোচনা সভায় ‘টিম কক্সবাজার’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা গাজী নাজমুল হকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার সিটি কলেজ সহকারী অধ্যাপক রোমেনা আক্তার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. মাহবুবুর রহমান, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের এসিএফ প্রাণতোষ, বাপা’র কক্সবাজার জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন ও
অপরাজিতা কক্সবাজার জেলা শাখার প্রকল্প কর্মকর্তা রওশন আখতার।

কক্সবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা দিয়েছে তীব্র পানিসংকট। চারপাশে নদী-নালা সহ অসংখ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাল-বিল দূষণের কবলে। এছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলে পানিতে লবণাক্ততার হার ও পরিমাণও বেড়েছে। খাবার পানির জন্য নিত্যনতুন হাহাকার শুরু হয়েছে এই অঞ্চলের মানুষদের।

কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালীর তীরে ময়লার স্তূপ। দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনার স্তূপ নদীর পানির সাথে মিশে গিয়ে নদী দূষণ করছে। এই নদীর পানির উপর নির্ভরশীল স্থানীয় জনগণ। নিত্যদিনের নানান কাজে ব্যবহার হতো এই পানি। এখন পুরো নদীটিই নানানভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে।

আলোচনা সভায় উপকূলীয় অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে, নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিতের জন্য কক্সবাজার পৌরসভা সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আহ্বান করেন বক্তারা।

আলোচনা সভায় বাপা কক্সবাজার শহর শাখার সভাপতি ও টিম কক্সবাজারের সহপ্রতিষ্ঠাতা মহিন উদ্দিন মাহিন, উই ক্যান কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সবুজ ও দুর্জয় দাশ, প্রোগ্রাম সমন্বায়ক মোরশেদ চৌধুরী সাকিব সহ সাংবাদিক, পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি সহ একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবী অংশগ্রহণ করেন।