আব্দুস সালাম,টেকনাফ

কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুটের যাত্রী ও খাদ্যপণ্য বাহি সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই কারণে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা। ফলে দ্বীপের মানুষের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন, সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ কোথাও আসা-যাওয়ার সুযোগ নেই। যারা গুলাগুলির আগে দ্বীপ থেকে বাহিরে কাজে এসেছেন তারাই আজ ৩/৪ দিন ধরে দ্বীপে যেতে না পেরে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। সমাধান না হওয়ায় আপাতত অনেকেই টেকনাফে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদীর মোহনা শেষে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা পার হওয়ার সময় মিয়ানমারের প্রান্ত থেকে দ্বীপে যাতায়াত করা ট্রলার এগুলোকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে। যার কারণে মানুষ প্রাণের ভয়ে পারাপার করতে চাইনা। তবে গুলি কি মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ছুটছে? নাকি বিদ্রোহীরা ছুটছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। গত কয়েক দিনে ২/৩ টি ট্রলার এ রকম আক্রমণ চালানো হলে ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকেরা।

এদিকে যোগাযোগ বিছিন্নের ফলে সেন্টমার্টিনে দেখা দিচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য সংকট। দ্বীপে বসবাসরত ১০ হাজারের অধিক বাসিন্দাদের মধ্যে যারা দিনে এনে দিনে খায় আপাতত কষ্টে বেশি পড়েছেন তারাই । খাদ্য ও পণ্য বাহি বোট চলাচল করতে না পারায় সেন্টমার্টিনের দোকানগুলোতে যেমন মজুদ কৃত খাদ্য পণ্য শেষ হতে চলেছে তেমনি সে সুযোগে কিছু অসাধারণ ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম দ্বিগুণ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর জন্য খাদ্য, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সমস্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

রবিবার (৯ জুন) দুপুরে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, দ্বীপে আসার পথে নাইক্ষ্যংডিয়া সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিন গামী নৌ যানের উপরে মিয়ানমার থেকে গুলি ছুড়ার কারণে গত ৩ দিন ধরে সেন্টমার্টিন – টেকনাফ যাত্রী ও পণ্য বাহি সব নৌ যান চলাচল বন্ধ। যার কারণে দৈনন্দিনের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য সংকট হচ্ছে। সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর অবস্থা খুব সংকটাপন্ন হবে। সমস্যা দীর্ঘ হওয়ার আগে যেন সরকার সামাধানের চেষ্টা করেন সে কামনা করছি।

সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দু রশিদ জানান, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে মানুষ ভয়ে যাচ্ছে না। তা ছাড়া ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোন ব্যবস্থা বা রুটও নাই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন – টেকনাফ নৌ রুটে ৬/৭ টি বোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করার পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্য পণ্য বহন করতেন।

টেকনাফ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
( ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরি জানান, এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে । তবে জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছি।