মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
# এইচএসসি পরীক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে : নির্বাহী প্রকৌশলী
# চাহিদা ৪৮ মেগাওয়াট, সরবরাহ ৩০ মেগাওয়াট
কক্সবাজার জেলায় বিদ্যুতের জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়া চলমান অস্বাভাবিক লোডশেডিং আগামী রোববার (৩০ জুন) পর্যন্ত থাকবে। আগামী সোমবার (১ জুলাই) থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, পুরো কক্সবাজার জেলায় বর্তমানে ৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। তারমধ্যে, জাতীয় গ্রীড থেকে কক্সবাজারে এখন সরবরাহ দেওয়া হয় মাত্র ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। অথচ কক্সবাজার জেলাতেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় ৬৬০ মেগাওয়াট। নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি স্বপরিবারে পবিত্র হজ্ব করতে সৌদি আরব অবস্থান সহ ছুটিতে ছিলেন ৪০ দিন। এসময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের অভাবে জাতীয় গ্রীড থেকে কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় লোডশেডিং অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিতে কিছু কিছু বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত ও টেকনিক্যাল সমস্যা হওয়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। আগামী রোববার থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎ কর্মীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন সংস্কার ও রক্ষাবেক্ষণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাতে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি। অথচ তিনি হজ্জের ছুটিতে যাওয়ার আগেও কক্সবাজারে কমপক্ষে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। তখন কক্সবাজারে খুব একটা লোডশেডিং হতোনা।
তিনি আরো জানান, হজ্জ্ব থেকে এসে তিনি গত বুধবার (২৬ জুন) হতে তাঁর দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতীয় গ্রীড থেকে কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ চাহিদা অনুযায়ী বাড়াতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে তিনি প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করছেন। কক্সবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরছেন। আগামী রোববার (৩০ জুন) ঢাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের সদর দপ্তরে বিদ্যুৎ পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের সভা রয়েছে। সে সভায় নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি অংশ নেবেন এবং কক্সবাজারে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবেন। তাঁর ধারণা, বিদ্যুৎ পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের সভাতে তিনি কক্সবাজারের জন্য কমপক্ষে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ নিতে পারবেন। ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কক্সবাজারে জাতীয় গ্রীড থেকে নিয়মিত সরবরাহ পেলেই কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন এলাকায় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর খুব একটা থাকবেনা বলে নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি আশাবাদ ব্যক্ত করেছন। এজন্য আগামী সোমবার থেকে লোডশেডিং কেটে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আওতাবহির্ভূত কারণে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন গ্রাহকগণ সাময়িক দুর্ভোগে থাকায় নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আবদুল কাদের গণি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারে প্রতিদিন ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। তারমধ্যে, মহেশখালী মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৬০০ মেগাওয়াট এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুল বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।